দেশের আট লাখ গ্রাহক বর্তমানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আর্থিক খাতের সেবা নিচ্ছে। ১৪ বাণিজ্যিক ব্যাংকের চালু করা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবার আওতায় এ সুযোগ পাচ্ছে গ্রাহকরা। এসব ব্যাংক সমগ্র দেশে ১৮ হাজার ৫৮১ এজেন্টের মাধ্যমে এ সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছে। এ মাধ্যমে দৈনিক লেনদেন হচ্ছে এক হাজার কোটি টাকা। গতকাল রাজধানীর উত্তরখান ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্রে ডাচ বাংলা ব্যাংক (ডিবিবিএল) এবং এয়ারটেল আয়োজিত মোবাইল ব্যাংকিং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব এন আই খান, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল জিয়া আহমেদ, ডাচ্বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে শামসি তাবরেজ, বেসরকারি মুঠোফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এয়ারটেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
গভর্নর বলেন, দেশের প্রত্যন্ত জনপদের বিশাল জনগোষ্ঠী ব্যাংকিং সেবা থেকে বঞ্চিত। প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার মাত্র ২৪ ভাগ ব্যাংকিং সেবার আওতায় রয়েছে। এ কারণে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক গ্রামীণ শাখা খোলার ব্যাপারে জোর তত্পরতা চালাচ্ছে। এ কারণে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নতুন শাখা খোলার নীতিমালায় ১:১ অনুপাত অনুসরণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মোট জনসংখ্যার শতকরা ৬০ ভাগ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। শহর-গ্রাম, উচ্চবিত্ত-নিম্নবিত্ত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। দেশে এমন সব অঞ্চল রয়েছে যেখানে অর্থনৈতিক বিবেচনায় হয়তো কখনই ব্যাংকের শাখা খোলা হবে না। কিন্তু মোবাইল নেটওয়ার্ক আজ সারা দেশের আনাচে-কানাচে বিস্তৃত। এ সুযোগ কাজে লাগাতে বিকল্প পেমেন্ট চ্যানেল হিসেবে ব্যাংকিং খাতে মোবাইল প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ২৩টি বাণিজ্যিক ব্যাংককে মোবাইল প্রযুক্তিভিত্তিক বিভিন্ন সেবা প্রদানের অনুমোদন দিয়েছে বলে জানান আতিউর রহমান। এগুলোর মধ্যে ১৪টি ব্যাংক তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।
জিয়া আহমেদ বলেন, মোবাইল এমন একটি প্রযুক্তি যেটাকে ব্যবহার করে আমরা বহুমুখী কাজ করতে পারি। এক্ষেত্রে প্রয়োজন কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত ও সেটা বাস্তবায়নের মানসিকতা। এটা আমাদের জগতটাকে একেবারে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে। এখন এর সুফল বের করার দায়িত্ব আমাদের। ডিবিবিএলের মতো প্রতিটি ব্যাংক যদি এ ধরনের সেবা চালু করে তাহলে খুব বেশি সময় বাকি নেই যখন দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ ব্যাংকিং সেবা পাবে। এ বিষয়ে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংককে আরও উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান।
কে তাবরেজ বলেন, ডাচ বাংলা ব্যাংক নিজের মুনাফা অর্জনে গ্রাহকের চাহিদাকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়। এ কারণে ব্যাংকটি বর্তমানে প্রচলিত মোবাইল ব্যাংকিং সেবার আওতা বাড়াতে কাজ করছে।