বিবারের ফাইনাল একটা দুর্দান্ত ব্যাপার হতে যাচ্ছে। নেটের এক দিকে থাকছে একজন চ্যাম্পিয়ন। যার লক্ষ্য, নিজের বিশাল গ্র্যান্ড স্লাম ঝুলিতে আরও একটা মেজর পুরে ফেলা। আর নেটের অন্য দিকে যে চ্যাম্পিয়ন থাকবে তার চেষ্টা হবে জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম জিতেই ইতিহাসে ঢুকে পড়া। দুই চ্যাম্পিয়নই সেন্টার কোর্টে প্রচণ্ড জনপ্রিয়। তবে আমি যদি রজার ফেডেরার হতাম, আজ অ্যান্ডি মারের মুখোমুখি হওয়ার সময় বেশি সমর্থনের প্রত্যাশা করতাম না।
ফাইনালে কে ফেভারিট বলার চেষ্টা আমি করব না। বরং অনেক কারণে আমি দুই ফাইনালিস্টেরই জয় দেখতে চাইছি। ফেডেরারের জন্য আমার ভালবাসা রয়েছে। আমার হৃদয় বলছে, ওর ১৭ নম্বর গ্র্যান্ড স্লাম জেতার ক্ষমতা আছে। তবে সেটা শুধু এই কোর্টেই। অন্য দিকে আমি এটাও চাই যে, মারে ওর কাঁধ থেকে গ্র্যান্ড স্লাম না জিততে পারার ভূত ঝেড়ে ফেলে টেনিস প্লেয়ার হিসেবে নিজেকে পরের পর্যায়ে তুলে নিয়ে যাক। কারণ আমি জানি মারে একটা গ্র্যান্ড স্লাম জিততে পারলে ওর ভবিষ্যতে আরও অনেক গ্র্যান্ড স্লাম জেতার ক্ষমতা আছে।
দু’জন প্লেয়ারই সত্যিকারের ভাল খেলছে। ফেডেরার কোয়ার্টার আর সেমিফাইনাল, দুটো বাধাই টপকেছে টেনিস খেলাটার সব সৌন্দর্য ফুটিয়ে। ওর দ্বিতীয় সার্ভকে দুর্দান্ত দেখাচ্ছে। আর ব্যাকহ্যান্ড বরাবরের মতোই অসাধারণ। বড় ফাইনাল ফেডেরার প্রচুর খেলেছে। এবং আজ ও যদি গত এক সপ্তাহ যে টেনিসটা খেলছে সেটা খেলতে পারে, তা হলে ১৩৬ বছরের উইম্বলডনের ইতিহাসে উইলিয়াম রেনশঁ এবং পিট সাম্প্রাসের সর্বাধিক সাত বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলতে পারে।
ফেডেরার এর আগে গ্র্যান্ড স্লাম ফাইনালে মারেকে হারিয়েছে। তবে ও-ই প্রথম, যে স্বীকার করেছে তার পর থেকে মারের খেলা অনেক উন্নত আর পরিণত হয়েছে। মারে-শিবির ইভান লেন্ডলকে টিমে ঢুকিয়েছে, মারের কেরিয়ারে আজকের মুহূর্তটা আনার জন্যই। এখন দেখতে হবে যে, লেন্ডল ট্যাকটিক্যাল সাহায্যের পাশাপাশি মানসিক ভাবেও মারেকে সাহায্য করতে পেরেছি কি না। মারের বতর্মান খেলায় লেন্ডলের সাহায্য স্পষ্ট। লেন্ডলের পরামর্শে মারের ফোরহ্যান্ড শটের অবশ্যই উন্নতি ঘটেছে। বলে রাখি, আমার দেখা সেরা ফোরহ্যান্ড শট লেন্ডলেরই। মারেকে আগের চেয়ে বেশি ফোকাসড্ দেখাচ্ছে আর বেশি ঝুঁকি নেওয়ার সাহসও দেখা যাচ্ছে ওর খেলায়। তবে একটা কথা অত্যন্ত জরুরি যে, মারের পিছনে লেন্ডল যতই খাটুক না কেন, ফেডেরারের বিরুদ্ধে রবিবার যখন মারে খেলবে তখন ওকে নিজেকেই অন্য ‘গিয়ার’-এ তুলে নিয়ে যেতে হবে। কারণ, উইম্বলডন ফাইনালে রজারকে হারাতে গেলে ওর প্রতিদ্বন্দ্বীর খেলাকে অন্য গিয়ারে তুলতেই হবে।
জকোভিচের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে ফেডেরার ঘাসের কোর্টের সর্বোচ্চ মানের টেনিস খেলেছে। শুক্রবার ফেডেরারের খেলায় যেটা সবচেয়ে তাৎপর্যের বলে আমার মনে হয়েছে সেটা হল, ও সাধারণত ম্যাচে ‘স্লো স্টার্টার’ হলেও জকোভিচের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই প্রচণ্ড দ্রুত নড়াচড়া করেছে, ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠেছিল। অন্য সেমিফাইনালটাও প্রায় একই ধরনের হয়েছে। মারে-ও আর একজন ‘স্লো স্টার্টার’। কিন্তু জো সঙ্গার বিরুদ্ধে মারেও শুরু থেকে প্রতিটা বলকে প্রচণ্ড গতিতে তাড়া করছিল।
ফাইনালে কে কত দ্রুত গতিতে বল তাড়া করে সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।