আগামী অক্টোবরের মধ্যে একটি নীতিমালার আওতায় আসছে অনলাইন গণমাধ্যমগুলো। তথ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন এ সংক্রান্ত একটি খসড়া নীতিমালা প্রায় চূড়ান্ত বলে আজ বুধবার জানিয়েছেন।
সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে খসড়া নীতিমালা নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় খসড়া নীতিমালার অনুলিপি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সরবরাহ করা হয় এবং আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে লিখিত মতামত চাওয়া হয়।
সচিব বলেন, “আমরা নীতিমালার মাধ্যমে অনলাইন গণমাধ্যমের বিকাশ বাধাগ্রস্ত করতে চাই না, বরং বিকাশে সহায়তা করতে চাই।”
কমিউনিটি রেডিওর নীতিমালাকে ভিত্তি ধরে অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, অনলাইন গণমাধ্যমের লাইসেন্স নেওয়ার জন্য এককালীন পাঁচ লাখ টাকা তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। প্রতিবছর ৫০ হাজার টাকা ফি দিয়ে এই লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে। সরকার প্রয়োজনে লাইসেন্স ফি পুনর্নিধারণ করতে পারবে।
অনলাইন গণমাধ্যম স্থাপন ও পরিচালনায় তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে সভাপতি করে ১৪ সদস্যের ‘জাতীয় রেগুলেটরি কমিটি’ এবং মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবকে (স¤প্রচার) সভাপতি করে নয় সদস্যের আরো একটি তদারকি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে এতে।
সচিব জানান, “সরকারি হিসাবে সারাদেশে ২০০ অনলাইন সংবাদপত্র রয়েছে। ”
দৈনিক পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণের বিষয়ে ‘সিদ্ধান্ত’ নিতে আলাদাভাবে আলোচনা করা হবে বলে হেদায়েতুল্লাহ জানান।
বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা সভায় লাইসেন্স নবায়নের শর্ত খসড়া নীতিমালা থেকে বাদ দেওয়া এবং জাতীয় রেগুলেটরি কমিটিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি রাখার দাবি জানান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের স্যোশাল অ্যাফেয়ার্স এডিটর বেবী মওদুদ, বাংলানিউজ টোয়েন্টফোর ডট কমের প্রধান সম্পাদক আলমগীর হোসেন, প্রাইম খবর ডটকমের প্রধান সম্পাদক এস এম মেজবাহ উদ্দিনসহ বিভিন্ন অনলাইন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা এ সভায় অংশ নেন।

খসড়ায় যা আছে
অনলাইন গণমাধ্যমের লাইসেন্স নেওয়ার জন্য এককালীন পাঁচ লাখ টাকা তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।
প্রতিবছর ৫০ হাজার টাকা ফি দিয়ে এই লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে।
সরকার প্রয়োজনে লাইসেন্স ফি পুনর্নিধারণ করতে পারবে।
মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩০ দিন আগে লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করতে হবে।
নির্দিষ্ট সময়ে লাইসেন্স নবায়নে ব্যর্থ হলে পাঁচ হাজার টাকা সারচার্জ জমা দিয়ে সর্বোচ্চ দুই মাসের মধ্যে লাইসেন্স নবায়ন করা যাবে।
আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত ফরমে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে পাঁচ হাজার টাকার অফেরতযোগ্য ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডার জমা দিয়ে আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে।
“আবেদনের সঙ্গে ‘আর্নেস্টমানি’ বাবদ অফেরতযোগ্য দুই লাখ টাকা ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডার জমা দিতে হবে। লাইসেন্স পাওয়ার পর এ আর্নেস্টমানি জামানত হিসেবে গণ্য হবে।”
কোনো অনলাইন গণমাধ্যমের মালিক বা পরিচালক সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে একাধিক অনলাইন গণমাধ্যমের মালিক বা পরিচালক হতে পারবেন।
সরকারের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে, বিটিআরটির দেওয়া শর্ত ভাঙলে, নীতিমালার শর্ত ভাঙলে এবং সরকারের নির্দেশ না মানলে লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিল করা হবে।
অনলাইনে সম্প্রচারিত বিষয় (কনটেন্ট) ৯০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হবে।