ঈদে ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরা নির্বিঘ্ন করতে বাংলাদেশ রেলওয়ে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। আন্তঃনগর ট্রেনগুলো ঈদের ছুটিতেও চালু থাকবে। ঈদের ছুটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত রেলের স্টেশন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বাড়ানো হচ্ছে রেলকোচ। ঈদের ১০ দিন আগে থেকে রেলের অগ্রিম টিকিট পাওয়া যাবে। গতকাল রেলওয়ে ভবনে যাত্রী পরিবহনে অগ্রিম প্রস্তুতিমূলক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভায় জানানো হয়, বিগত বছরগুলোতে মাত্র ৩ দিন আগে ঈদের অগ্রিম টিকিট নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হতো। সময় খুবই কম হওয়ায় সিংহভাগ টিকিট চলে যেত কালোবাজারিদের কাছে।
এবার সে সুযোগ থাকবে না বলে জানানো হয়। প্রতিদিনই নির্ধারিত মাত্রায় টিকিট বিক্রি করা হবে। ইন্টারনেট বা মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও চলমান প্রক্রিয়ায় আগাম টিকিট কেনা যাবে। যোগাযোগমন্ত্রী সাংবাদিকদের আরো জানান, রেল ও সড়ক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা নির্বিঘ্ন রাখতে শুক্র ও শনিবার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রকৌশলীরা কাজ করবেন।
যোগযোগমন্ত্রী জানান, এবারের ঈদে সাত জোড়া বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে এবং বিআরটিসি বহরে ১৩০টি নতুন বাস যোগ হবে। তিনি বলেন, ঢাকা- দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা, চট্টগ্রাম-নোয়াখালী-চট্টগ্রাম, চট্টগগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম, পার্বতীপুর-ঢাকা-পার্বতীপুর, ঢাকা-খুলনা-ঢাকা রুটে বিশেষ ট্রেনগুলো ঈদের তিন দিন আগ থেকে এবং ঈদের পরের দ্বিতীয় দিন থেকে পাঁচ-সাত দিন পর্যন্ত চলাচল করবে। ঈদের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ার উদ্দেশে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব এবং ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ-এর রুটে দুই জোড়া ট্রেন চলবে।
এ ছাড়া ঈদ উপলেক্ষে আগামী ১৪ আগস্ট থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেনগুলো বন্ধের দিনেও চলাচল করবে যোগযোগমন্ত্রী জানান। আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে রেলের খারাপ দশা কাটিয়ে উঠতে পারবে বলেও আশা প্রকাশ করেন রেলমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ২৫ শতাংশ রেলের টিকিট অনলাইনে দেওয়া হচ্ছে পর্যায়ক্রমে টিকিট বিক্রির পুরো প্রক্রিয়াই অনলাইনে চলে যাবে। ঈদে বাড়ি যাওয়ার সময় ট্রেনের ছাদে না উঠতে অনুরোধ করেন যোগাযোগমন্ত্রী।
টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধে জিআরপি, আরএনবি, স্থানীয় পুলিশ ও র্যাবের সহযোগিতায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান যোগাযোগমন্ত্রী। রেল স্টেশনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে র্যাব ও ডিএমপি কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, ঈদ উপলক্ষে পাহাড়তলি ওয়ার্কশপ থেকে ৮০টি এবং সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ থেকে ৬০টি কোচ মেরামত করে করা হবে। এসব ট্রেন ক্ষেত্র বিশেষ সংযোজন দেওয়া হবে।