সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকা-ে একাধিক ব্যক্তির অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে র‌্যাব। হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ছুরি ও সংগ্রহ করা আলামত পরীক্ষা করে এমনটি নিশ্চিত হওয়া গেছে।


গতকাল শুক্রবার বিকালে র‌্যাব সদর দফতরে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিষয়ক পরিচালক কমান্ডার এম সোহায়েল এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের একটি পরীক্ষাগারে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও মেহেরুন রুনির টি-শার্টের পরীক্ষার পর একাধিক ব্যক্তির ডিএনএ শনাক্ত হওয়ায় ওই হত্যাকা-ে যে একাধিক ব্যক্তি জড়িত ছিল তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে রুনির টি-শার্ট থেকে একজনের ডিএনএ শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া দুটি ছুরির একটিতে চারজনের আঙুলের ছাপ এবং অন্যটিতে একাধিক ব্যক্তির হাতের ছাপ পরীক্ষায় ধরা পড়েছে।


সোহায়েল জানান, এ পরীক্ষার প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে, হত্যাকা-ে একাধিক ব্যক্তি জড়িত। তিনি বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে আলামত পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন হাতে এলে সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তে বড় ধরনের অগ্রগতি হবে।
তিনি আরো জানান, পরীক্ষার জন্য গত মাসেও কিছু আলামত যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে রুনির চুল, টিস্যু ও সাগরের রক্তমাখা জামা রয়েছে। সাগর সরওয়ার ও ছেলে মেঘের ডিএনএ পরীক্ষাও চলছে যুক্তরাষ্ট্রের ফোকল্যান্ডের ফরেনসিক ও ডিএনএ ল্যাবে।
হত্যাকা-ের পর ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষার জন্য দুই দফায় যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। এরপর গত ১২ জুন প্রথম দফায় পাঠানো হয় হত্যাকা-ে ব্যবহৃত একটি ছুরি, ছুরির বাঁট, সাগরের মোজা, পরনের প্যান্ট, রুনির পরনের প্যান্ট।
গত ১৭ জুলাই দ্বিতীয় দফায় পাঠানো হয় হত্যাকা-ের সময় যে কাপড় দিয়ে সাগরের হাত ও পা বাঁধা হয়েছিল সেই কাপড় ও রুনির টি-শার্ট।


উল্লেখ্য, গত ১০ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় নির্মমভাবে খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সময় তাদের শিশু সন্তান মেঘও বাসায় ছিল। ঘটনার পর সাগর-রুনি হত্যা মামলা তদন্তের ভার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে ছিল।


তিন মাসেও মামলার কোনো হদিস করতে না পেরে ডিবি তদন্তে নিজেদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ১৯ মে র‌্যাব সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব নেয়। এরপর গত ২৬ মে ভিসেরা আলামতের জন্য সাগর-রুনির লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। তবে তাদের শরীরে বিষক্রিয়ার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।