শারদীয় দুর্গোৎসবের চতুর্থ দিনে গতকাল রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকাল সোয়া তিনটায় তিনি সেখানে যান। মন্দিরে প্রবেশের পর প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ভক্ত-পুণ্যার্থীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সেখানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমরা জানি দেবী দুর্গা প্রত্যেক বছর কোন না কোন বাহনে চড়ে আমাদের এই বসুন্ধরায় আসেন। এবার দেবী এসেছেন গজে চড়ে। দেবী গজে চড়ে এলে জানি এই পৃথিবী ধন-ধান্যে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। আমরা তাই দেখছি। এবার ফসলও ভাল হয়েছে। মানুষ সুখে শান্তিতে আছে। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় দেশ থেকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি দূর করতে সরকার সক্ষম হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, এ নিয়ে আমাদের যে দুর্নাম ছিল তা আমরা ঘোচাতে পেরেছি। বিশ্বসভায় আমাদের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, আগে বাংলাদেশ বিশ্বে জঙ্গিবাদ আর দুর্নীতির দেশ হিসেবে পরিচিত হয়েছিল। তবে বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে একটি অসাম্প্রদায়িক ও শান্তির দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। ফলে মুসলমান, হিন্দু, খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধসহ সব ধর্মের লোক শান্তিতে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করছে। আমাদের সরকার অসামপ্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক। আমরা জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাসী। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ শান্তি-সমপ্রীতির দেশ। আর এই শান্তি-সমপ্রীতি সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছে। আশা করি আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকবো। ঐক্যবদ্ধ থাকলে বাংলাদেশ উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে এখন বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে। সারা বিশ্ব যেখানে মন্দার শিকার সেখানে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিই এর প্রমাণ। দেশের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৭ ভাগ।
তিনি বলেন, দেশ ধাপে ধাপে গণতন্ত্র ও উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করে। আমরা বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সারাদেশে ২৮ হাজার মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে উল্লেখ করে এ ব্যাপারে সহযোগিতার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ দুর্গাপূজা পালন করছে আর এতে অন্য ধর্মের মানুষরাও যোগ দিচ্ছে। এমনিভাবে সব ধর্মের মানুষ অংশ নেয়ায় বাংলাদেশ যে অসাম্প্রদায়িক একটি দেশ তা প্রমাণিত হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আইন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট শামসুল হক টুকু, ধর্মপ্রতিমন্ত্রী এডভোকেট শাজাহান মিয়া, স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্ত (বীরউত্তম), মহানগর পূজা কমিটির নেতা এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাবুল দেবনাথ, সাবেক সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম, ঢাকার পুলিশ কমিশনার বেনজির আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।