দুর্নীতি বিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) আবার সাবেক রেলমন্ত্রী ও বর্তমানে দফতরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পদত্যাগ দাবি করেছে।
সোমবার সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ ব্যাপারে যে অবস্থান নিয়েছে তা অগ্রহণযোগ্য ও অপরিণামদর্শী। প্রাক্তন রেলমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস)-এর গাড়িচালক আজমের সাম্প্রতিক টেলিভিশন সাক্ষাতকারের প্রেক্ষিতে অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে নৈতিক অবস্থান থেকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে পদত্যাগের আহ্বান জানানো হচ্ছে। একই সঙ্গে দুদকের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করছে টিআইবি।
এতে আরো বলা হয়, রেলওয়ে কেলেংকারির প্রকৃত সত্য উদঘাটন ও দোষীদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে তথ্য প্রকাশকারী হিসেবে গাড়িচালক আজমের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। তথ্য প্রকাশকারীর সুরক্ষা আইন ২০১১ অনুযায়ী তার নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্ব দুদক ও সরকারের।
বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “গাড়িচালক আজমের টেলিভিশন সাক্ষাৎকারের প্রেক্ষিতে দুদক কর্তৃক রেলওয়ের দুর্নীতির পুন:তদন্ত না করার ঘোষণা অগ্রহণযোগ্য ও অপরিণামদর্শী। বিশেষত, তথ্য প্রকাশকারী হিসেবে গাড়িচালক আজমের টিভি সাক্ষাতকারের বক্তব্যকে বিবেচনায় না নিয়ে তার পেশাগত অবস্থান সম্পর্কে দুদকের অসম্মানজনক বক্তব্য দুঃখজনক। সাক্ষী বা তথ্যপ্রদানকারী যে পর্যায়েরই হোক না কেন, সংবিধান ঘোষিত সব নাগরিকের সমান অধিকার ও মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়াটাই দুদকের কাছে প্রত্যাশিত।”
তিনি আরো বলেন, “গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের আদালতে আমলযোগ্যতা সম্পর্কে প্রশ্ন থাকতে পারে। ওই বক্তব্যের যথার্থতাও যথাযথ প্রক্রিয়াই নির্ধারিত হতে হবে। তবে তদন্তের স্বার্থে এরূপ তথ্যের গুরুত্ব দেওয়া একদিকে তদন্তের বস্তুনিষ্ঠতা ও গ্রহণযোগ্যতার জন্য অপরিহার্য, অন্যদিকে ঢালাওভাবে এর প্রত্যাখ্যান করা তথ্য প্রকাশকারীর সুরক্ষা আইন ২০১১ এর পরিপন্থি। দুদক যদি তার দায়িত্ব পালনে বাস্তবেই অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়, তবে ওই অবস্থান থেকে সরে এসে দুদক-এর উচিত গাড়িচালক আজমকে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সরকার তথা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা নিশ্চিত করা। অন্যথায় সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত তদন্তের মাধ্যমে ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার ব্যাপারে দুদকের অবস্থান ও যোগ্যতা সম্পর্কে জনমনে আস্থাহীনতা আরো বৃদ্ধি পাবে।”
বিবৃতিতে বলা হয়, রেলওয়ে নিয়োগ কেলেংকারির ঘটনার পর প্রাক্তন রেলমন্ত্রী চাপের মুখে সাময়িকভাবে পদত্যাগ করেও দপ্তরবিহীন মন্ত্রীর পদে বহাল থেকে যেভাবে বিতর্কিত হয়েছেন, তারই প্রেক্ষিতে গাড়িচালক আজম কর্তৃক তথ্য প্রকাশের পর ওই কেলেংকারিতে তার সম্ভাব্য ভূমিকার প্রভাবমুক্ত তদন্তের স্বার্থে ও নৈতিক অবস্থান থেকে অনতিবিলম্বে তার পুনরায় পদত্যাগ করা উচিত।