নবম জাতীয় সংসদের ১৪তম অধিবেশন বসবে আজ  মঙ্গলবার বিকেল ৫টায়। গত ১২ আগস্ট রাষ্ট্রপতি  মোঃ জিল্লুর রহমান সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের ১ দফায় দেয়া ক্ষমতা বলে এ অধিবেশনের আহবান করেছেন।
তবে চলতি অধিবেশনেও যোগ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুর্ণবহালের বিল আনলেই  কেবল তারা সংসদে যাবেন বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।


গতকাল সোমবার সকালে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বলেন, আগামী সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল আনা হবে এ নিশ্চয়তা পেলে বিএনপি সংসদে যাবে। আর তা না হলে বিএনপি সংসদে গিয়ে সময় অপচয় করতে চায় না। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের চতুর্থ কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত মুক্ত আলোচনা ও মিলাদ মাহফিলে দেয়া এ কথা বলেন ফারুক।


আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মু. রহমতুল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনায় আরো অংশ নেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. গাজী মাজহারুল ইসলাম দোলন, নির্বাহী কমিটির সদস্য খালেদা ইয়াসমিন, স্বদেশ মঞ্চের সভাপতি মামুনুর রশিদ খান প্রমুখ। আলোচনা শেষে তারেক রহমানের জন্য মিলাদ ও দোয়া পাঠ করা হয়।


বিএনপির প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক বিএনপির ‘নরম’ আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে শুরু হওয়া নানামুখী সমালোচনারও জবাব দেন। সরকারকে সতর্ক করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া আন্দোলন জানেন। এ সরকারকে হটাতে আন্দোলনের কী কারিশমা ব্যবহার করতে হবে, খালেদার তা জানা আছে।


ইতোমধ্যে সংসদ সচিবালয়ের পক্ষ থেকে অধিবেশনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। চূড়ান্ত প্রস্তুতির অংশ হিসাবে ৪ তারিখ মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় স্পিকার আবদুল হামিদ এডভোকেটের সভাপতিত্বে সংসদ কার্য উপদেষ্টা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ সভায় ১৪তম অধিবেশনের কার্যক্রম এবং মেয়াদ নির্ধারন করা হবে।
উল্লেখ্য, নবম সংসদের এ পর্যন্ত ১৩টি অধিবেশনের মধ্যে ৮টিতেই যোগ  দেয়নি বিএনপি ও জামাত। ৩১৭ কার্য দিবসের মধ্যে বিএনপি সংসদে ছিলো মাত্র ৫৪ দিন। এবারও যাচ্ছেনা তারা। তাদের সংসদে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারি দলের চিফ হুইপ বলেন বিরোধী দল প্রয়োজন মনে করলে তারাও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল সংসদে আনতে পারে।


সংসদের ১৩ম তথা বাজেট অধিবেশন গত ৮ জুলাই শেষ হয়। গত ২৭  মে বাজেট তথা ১৩তম অধিবেশন শুরু হয়েছিল। সংবিধান অনুযায়ী এ অধিবেশনে গত ৭ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ২০১২-’১৩ অর্থ বছরের জন্য ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন। গত ২৮ জুন এ বাজেট পাস করা হয়। ওই অধিবেশনে মোট ২৯টি কার্যদিবসে বাজেটের ওপর মোট ৪৬ ঘণ্টা ৩০ মিনিট আলোচনা হয়। এর মধ্যে মূল বাজেটের ওপর ৪৩ ঘণ্টা ২২ মিনিট এবং সম্পূরক বাজেটের ওপর ৩ ঘণ্টা ৮ মিনিট আলোচনা হয়।


বাজেট পাস ছাড়াও ওই অধিবেশনে ৩১ টি সরকারি বিলের মধ্যে ১৫ টি বিল পাস হয়। আইন প্রণয়ন সম্পর্কিত কাজ সম্পাদনের পাশাপাশি কার্যপ্রণালী-বিধির ৭১ বিধিতে ৫৩৭টি নোটিশ পাওয়া গিয়েছে।  নোটিশগুলোর মধ্যে ২৭টি নোটিশ গৃহীত হয় এবং গৃহীত নোটিশের মধ্যে ২১টি সংসদে আলোচিত হয়। ৭১ (ক) বিধিতে দুই মিনিটের আলোচিত  নোটিশের সংখ্যা ছিলো ১৮০টি।