পদ্মা সেতুসহ গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প যথাসময়ে শুরু করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ ও তা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার জন্য সচিবদের নির্দেশ দিয়েছেন ।ব্যক্তিগত অনিচ্ছা বা দক্ষতার অভাবে উন্নয়ন ব্যাহত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সচিবদের সঙ্গে সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব পরামর্শ ও নির্দেশ দেন।
গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো নেতিবাচক রাজনৈতিক চাপ থাকলে সরাসরি তা প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করার জন্যও তিনি সচিবদের নির্দেশ দিয়েছেন। জনস্বার্থকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে জনসেবায় অধিকতর আন্তরিক হয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো বিষয়ে দুর্বলতা থাকলে শুরুতেই তা সমাধান করতে হবে।
মন্ত্রণালয়ের কাজে গতি আনার জন্য পরামর্শ দেন তিনি। সুষ্ঠুভাবে সরকার পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য সচিবদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত উন্নয়ন ও সংস্কার হবে বলেও তিনি সভাকে অবহিত করেন। সভা সূত্র আরো জানায়, সাম্প্রতিককালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং ও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর বাংলাদেশ সফর ও সব জাতীয় অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় আইনশৃঙ্খলার প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত মনিটরিংয়ের পাশাপাশি অব্যাহতভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার প্রতি তাগিদ দিয়েছেন। প্রশিক্ষণবিহীন কোনো ব্যক্তি যাতে কোনোভাবেই ড্রাইভিং লাইসেন্স না পায় সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের হুঁশিয়ার করেন। সড়ক, স্বরাষ্ট্র, বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের কর্মদক্ষতায় প্রধানমন্ত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করেন। গ্রামের মানুষ যাতে শহরমুখী না হয় সে জন্য গ্রামাঞ্চলে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি বহুতল ভবন নির্মাণের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। কৃষিজমি যাতে অন্য খাতে ব্যবহৃত না হয় সে বিষয়েও তাগিদ দিয়েছেন। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব এম আবদুল আজিজ সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
দক্ষতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে জনকল্যাণে কাজ করতে পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রশাসনকে গতিশীল করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন। সচিবদের সঙ্গে দীর্ঘ সাড়ে ৩ ঘণ্টা বৈঠকে ২৪ জন সচিব বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী ধৈর্যসহকারে সচিবদের বক্তব্য শোনেন। তবে সচিবদের বক্তব্যে তিনি কোনো অসন্তোষ প্রকাশ করেননি।
আবদুল আজিজ বলেন, প্রধানমন্ত্রী সচিবদের প্রতি সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। তিনি ২০১১ সালের মধ্যে সব শিশুকে বিদ্যালয়মুখী এবং ২০১৪ সালের মধ্যে নিরক্ষরতা দূর করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে বলেছেন। এ ছাড়া শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ এটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এককভাবে করতে পারে না। এটি বাস্তবায়নে সব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব রয়েছে। আর স্নাতক পর্যন্ত ফ্রি এডুকেশন বাস্তবায়নে সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
বৈঠকে সড়ক বিভাগের সচিব বলেন, সময়মতো অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় প্রত্যাশিত সড়ক সংস্কার করা যায়নি। জবাবে প্রধানমন্ত্রী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, আমাদের অর্থ সীমিত, এর মধ্যে সবকিছু ঠিক রাখতে হবে।