জিপিএর ভিত্তিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত বাদ দিয়ে পরীক্ষা নিয়ে মেডিকেলে ভর্তির আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসিতে জাতীয় শোক দিবসের এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফের পরিচালনায় সভায় আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন, বর্তমান সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ প্রমুখ।


হানিফ বলেন, শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে ভর্তির স্বপ্ন নিয়ে আছে। আমি আশা করছি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টরা বাস্তবতা বিবেচনা করে ভর্তি পরীক্ষার ব্যবস্থা করবেন। তিনি বলেন, ভর্তিচ্ছুদের রাজপথে থাকা কাম্য নয়।
এতদিন মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তিতে পরীক্ষা হলেও এবার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের জিপিএর ভিত্তিতেই এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।


সরকারের এ সিদ্ধান্তের পরপরই আন্দোলন শুরু করে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। 'মেডিকেল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মঞ্চ' ব্যানারে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীকেও স্মারকলিপি দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
সড়ক দুর্ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভাঙচুরের সমালোচনা করে হানিফ বলেন, বাংলাদেশ জনবহুল দেশ হওয়ায় এমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধ্বংসলীলা চালানো ঠিক নয়। বাসচাপায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র তৌহিদুজ্জামান নিহত হওয়ার পর মঙ্গলবার রাতে ক্যাম্পাসসংলগ্ন এলাকায় বেশকিছু গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা।


পশ্চিমা বিশ্বের সমালোচনা করে হানিফ বলেন, পশিচমা বিশ্বের যারা আমাদের দেশের আইন-শৃঙ্খলাকে কটাক্য করেন। মানবাধিকার পরিস্থিতি ভালো নেই বলে সমালোচনা করেন তাদের দেশের চেয়ে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্ঘলা ও মানবাধিকার পরিস্থিতি অনেক ভালো আছে।
বিরোধী দলের সমালোচনা করে হানিফ বলেন, জনপ্রিয়তা না থাকায় বিএনপি গাজীপুরের উপনির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না।
আহমদ হোসেন বলেন, জিয়াউর রহমানই বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রধান পরিকল্পনাকারী, প্রধান পৃষ্টপোষক। কারণ জিয়াই খুনিদের আশ্রয় দিয়েছিল। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া হলেন বাংলাদেশের বড় হঠকারী। ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করে হঠকারিতার পরিচয় দেন।
ছাত্রলীগের দুগ্রুপের মুখোমুখি : শোক দিবসের আলোচনা সভা শেষে ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি মেহেদী হাসান মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফের কর্মীরা বাকবিত-তায় লিপ্ত হয়ে পরস্পর মুখোমুখি অবস্থান নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ওমর শরীফ ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটির নেতাদের নাম না ঘোষণা করায় মেহেদীর কর্মীরা শরীফের কর্মীদের ওপড় চড়াও হয়। বাকবিত-ার এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। পরে সিনিয়র নেতার এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।


এ বিষয়ে ওমর শরীফ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যে ১ মে ১৩৭ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। এটি একপক্ষীয়। এজন্য এদের নাম ঘোষণা করা হয়নি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৩৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।