সন্ধ্যা ৬ টা ৪০।আৎকে উঠেন ছোট বড় সবাই। দোলে উঠে ঘর, উপরের ফ্যান, ঝুলানো জিনিসপত্র। কাপতে শুরু করে দরজা জানালা। হতবাক হয়ে ততক্ষণে তারা বুঝে গেছেন, কি ঘটছে। ভূমিকম্প টের পেয়ে আতঙ্কে যে যার কাজ ফেলে দ্রুত বেরিয়ে আসেন বাইরে। ঘর, বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত, মার্কেট, শপিংমল, হাটবাজারের দোকানে সব কিছু ফেলে প্রাণের মায়ায় তারা খোলা আকাশের নিচে এসে দাড়ান।
বিশেষ করে বহুতল ভবনের বাসিন্দাদের মাঝে ছিল সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক। তারা দ্রুত নিচে নেমে আসেন। তাড়াহুড়ো করে বেরুতে গিয়ে আহত হন কেউ কেউ।
এটা সারা দেশের চিত্র। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সবগুলো শহরের মানুষ নেমে আসেন রাস্তায়। রাজধানীর বাসিন্দাদের মাঝে সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক বিরাজ করে। প্রায় সবগুলো সরকারী অফিস-আদালত এসময় বন্ধ থাকলেও বেসরকারী অনেক প্রতিষ্ঠানে তখন কাজ চলছিল। সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় তখন ব্যস্ত ছিলেন সংবাদকর্মী থেকে শুরু করে অন্যান্যরা। তারাও আতঙ্কে দ্রুত বাইরে বেরিয়ে আসেন।
ভূমিকম্পের পর অনেকে নিজ বাসা বা অফিসে ফাঁটল ধরলো কিনা সেই খোঁজ নিতে দেখা যায়। গ্রামের লোকজন ভূমিকম্পের মাত্রা অনুমান করতে পুকুর পাড়ে এসে ঢেউয়ের গতি পরখ করেন। ভূমিকম্পের পরপরই দৈনিক মানবজমিনসহ সকল সংবাদ মাধ্যমের অফিসে বিভিন্ন এলাকা থেকে আতঙ্কিত মানুষ ভূমিকম্পের খোঁজ খবর নিতে শুরু করেন। বাইরে অবস্থানকারীরা নিজেদের বাসায় খোঁজ নেন। এছাড়া আত্মীয় পরিজনের কাছেও ফোন করে জানতে চান ভূমিকম্পের ব্যাপারে।
আবহাওয়া অফিসের মতে, এটা বাংলাদেশে এ যাবৎ কালের সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প। বাংলাদেশ আর্থ কোয়াক সমিতির সাধারন সম্পাদক এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক, ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী সংবাদ মাধ্যমকে জানান, গত ৬০ বছরের সবচেয়ে বড় মাত্রার ভূমিকম্প। তবে আতঙ্কের আরেক খবর দেন তিনি। বলেন, ভূমিকম্পের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি রয়েছে আগামী কাল পর্যন্ত।