জমজমাট আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত দু’দিনব্যাপি ‘ডিইউআইটিএস-স্যামসাং ক্যাম্পাস প্রযুক্তি উৎসব’ শেষ হয়েছে বৃহষ্পতিবার। ‘আইসিটি এনাবল ক্যাম্পাস ফর বেটার এডুকেশন’ (উন্নত শিক্ষায় প্রযুক্তি নির্ভর ক্যাম্পাস) প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে ঢাকা ইউনিভার্সিটি আইটি সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত এ উৎসবে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রায় ৩০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ শতাধিক শিক্ষক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। সমাপনী দিনের কর্মসূচির মধ্যে ছিলো আইসিটি অ্যানাবল ডিজিটাল ক্যাম্পাস শীর্ষক সেমিনার, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, কুইজ কনটেস্ট, ইন্টারনেট ও আউটসোর্সিং বিষয়ক কর্মশালা এবং পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠান। দর্শনার্থীদের মন মাতাতে বিকেলে জনপ্রিয় ব্যান্ড দলের অংশগ্রহণে সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সমাপনী দিনে দুটি সেশনে অনুষ্ঠিত হয় উৎসব। প্রথম সেশনে সকালে আয়োজিত হয় প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষায় শিক্ষকদের ভ’মিকা শীর্ষক সেমিনার। প্রযুক্তিনির্ভর ক্যাম্পাস তৈরির জন্য করনীয় বিষয়ে পেজেন্টেশন প্রদর্শন করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সিইসি বিভাগের প্রধান প্রফেসর সেয়দ আকতার হোসেন। উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর ড. লুৎফর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ।

এছাড়া এদিন বিকেলে ইন্টারনেট ও আউটসোসিং বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে উৎসবে অংশ নেওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্য থেকে বিজয়ী প্রকল্পগুলোকে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া অংশগ্রহণকারী সকল প্রকল্পকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অগ্রণী ব্যাংকের মাননীয় চেয়ারম্যান খন্দকার বজলুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর সদ্যনির্বাচিত সভাপতি জনাব এ কে এম ফাহিম মাশরুর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় প্রক্টর আমজাদ হোসেন প্রমুখ। সমাপনী অনুষ্ঠানের পর জনপ্রিয় ব্যান্ড দল ও শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।

এর আগে উৎসবের উদ্বোধনী দিনে (বুধবার) সকাল ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষাথী মিলনায়তনে (টিএসসি) বর্নাঢ্য র‌্যালির মাধ্যমে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব নুরুল ইসলাম নাহিদ। উপস্থিত ছিলেন স্যামসাং বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টও সি এস মুন, ডিউইআইটিএস মডারেটর ড. শফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া। উদ্বোধনী র‌্যালিটি টিএসসি মিলনায়নতন থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ফিরে আসে।

উৎসবে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের প্রকল্প প্রদর্শন, গেমিং কনটেষ্ট, কুইজ প্রতিযোগিতা, কর্মশালা, সেমিনার, তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর বিতর্ক, বিজনেস আইডিয়া প্রতিযোগসহ রয়েছে নানা আয়োজন। এছাড়াও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও মিট দ্যা পার্সোনালিটির আয়োজন ছিলো।

উৎসবে মোট ২টি সেমিনার, ২টি কর্মশালা ও একটি আলোচনা পর্ব থাকছে। এছাড়াও রয়েছে ল্যাপটপ ও কম্পিউটার  সার্ভিস ডেস্ক। উৎসব চলাকালীন কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সমস্যা সমাধান করা যাচ্ছে এখানে।
এ আয়োজনের মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ভর ক্যাম্পাস গড়তে প্রস্তাবনাও রাখা হবে।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রায় ২০টি প্রকল্প প্রদর্শিত হয় উৎসবে। এসব প্রকল্প থেকে সেরা তিন প্রকল্পকে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া কুইজ প্রতিযোগিতা ও গেমিং কনটেস্টেও ঢাকা ও ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহন ছিলো। 

প্রথমবারের মত তথ্য-প্রযুক্তি নিভর বিতর্কের আয়োজন করা হয়। এতে শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তির সহয়তা নিয়ে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করে। এটি বারোয়ারি পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহৎ এ আয়োজনে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে হাত বাড়িয়ে দেয় বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তিপন্য প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। এছাড়াও এ আয়োজনে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ছিলো বিশ্বের সর্ববৃহৎ মাইক্রোপ্রসেসর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইন্টেল। এতে সেমিনার পার্টনার হিসেবে ছিলো বাংলাদেশের সর্বাধিক পঠিত অনলাইন জবসাইট বিডিজবস্ ডট কম এবং গ্রামীন-ইন্টেল স্যোসাল বিজনেস। এছাড়াও এতে সর্বোতভাবে সহায়তা করে বিডিওএসএন এবং আইডিয়া ফ্যাক্টরি।