ঘানার প্রেসিডেন্ট জন আতা মিলস আর নেই। গত মঙ্গলবার রাজধানী আক্রার একটি সামরিক হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ঘানায় স্থিতিশীল গণতন্ত্র অব্যাহত রাখতে জোরালো ভূমিকা রাখায় আন্তর্জাতিকভাবে অত্যন্ত প্রশংসিত ছিলেন মিলস। তাঁর মৃত্যুর পর ভাইস প্রেসিডেন্ট জন দ্রামানি মাহামাকে দ্রুত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।


গত শনিবার ৬৮তম জন্মদিন পালন করেছিলেন মিলস। চলতি বছরের ডিসেম্বরে পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল। বিশ্বের দ্বিতীয় কোকো উৎপাদনকারী রাষ্ট্র ঘানার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে মিলসের মৃত্যু সম্পর্কে বলা হয়, ‘আমরা অত্যন্ত ভারাক্রান্ত মনে রিপাবলিক অব ঘানার প্রেসিডেন্টের আকস্মিক ও অকাল মৃত্যুর খবর ঘোষণা করছি।’ বিবৃতিতে মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে মিলস অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বলে জানানো হলেও বিস্তারিত আর কিছু উল্লেখ করা হয়নি।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রেসিডেন্টের এক সহযোগী জানান, গত সোমবার সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট ব্যথা অনুভব করছেন বলে জানিয়েছিলেন। আর মঙ্গলবার বিকেলেই তিনি মারা যান। তখন তাঁর অবস্থা খুবই খারাপ ছিল।


মিলসের মৃত্যু সংবাদ ঘোষণার পর পরই ঘানার সংবিধান অনুযায়ী ৫৩ বছর বয়সী ভাইস-প্রেসিডেন্ট জন দ্রামানি মাহামা প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন। তিনি এ বছরের শেষ নাগাদ অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।


বিশ্লেষকরা এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নেওয়া পদক্ষেপসমূহকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের বিবেচনায় এসব কিছু এটাই প্রমাণ করে যে দেশটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো স্বচ্ছ ও যথার্থভাবে কাজ করছে। কয়েক সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে শারীরিক পরীক্ষা-নীরিক্ষা শেষে দেশে ফেরার পর মিলসের অসুস্থতা নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় সংবাদপত্রগুলোর অনুমান, মিলসের গলায় ক্যান্সার ধরা পড়েছিল।


মিলস ২০০৯ সালের ৭ জানুয়ারি ঘানার নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ঘানার নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ডিসেম্বরেই দেশের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন হবে।


১৯৫৭ সালে যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে ঘানা। এরপর নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে আফ্রিকার একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত হয় ঘানা।

সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি।