লেবাননের মন্ত্রিসভা রাজধানী বৈরুতে বড়ো ধরনের এক গাড়ি-বোমা বিস্ফোরণের পরদিন নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছে। এই বিস্ফোরণের পর প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি পদত্যাগেরও প্রস্তাব দিয়েছেন।

শুক্রবারের বিধ্বংসী বিস্ফোরণে হামলায় দেশটির গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধানসহ আটজন নিহত হয়। তার পর আজ লেবানন জুড়ে রাষ্ট্রীয়ভাবেই পালিত হচ্ছে শোক দিবস – আর তারই মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে আপদকালীন বৈঠকে বসে দেশের মন্ত্রিসভা।

সেখানেই প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি জানান তিনি পদত্যাগ করতে চেয়েছেন – তবে প্রেসিডেন্ট মাইকেল সুলেইমান তাঁকে আপাতত দায়িত্ব চালিয়ে যেতে বলেছেন। ফলে জাতীয় স্বার্থেই তিনি আপাতত প্রধানমন্ত্রীর কাজচালিয়ে যাবেন বলে জানান মিমিকাতি – সেই সঙ্গেই বলেন গোটা দেশকে এখন ঐক্যবদ্ধ, শক্তিশালী ও সুরক্ষিত রাখতে হবে।

এদিকে গতকালের বিস্ফোরণেরজন্য প্রতিবেশী সিরিয়াকেইদায়ী করেছে লেবাননের বিরোধীরা। বিরোধী নেতা সাদ হারিরি-র সমর্থকরা রাস্তায় টায়ার পুড়িয়ে ওই বোমা-হামলার প্রতিবাদও জানিয়েছেন।

জাতীয় স্বার্থেই আমি আপাতত প্রধানমন্ত্রীরকাজ চালিয়ে যাব – আর আমাদের পুরো দেশকেও ঐক্যবদ্ধ, শক্তিশালী ওসুরক্ষিত থাকতে হবে ” নাজিব মিকাতি, লেবাননেনর প্রধানমন্ত্রী দ্রুজ নেতা ওয়ালিদ জাম্বলাটও অভিযোগ করেছেন, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদই এই বিস্ফোরণের পেছনে আছেন।

লেবাননের শিয়া গোষ্ঠী হেজবোল্লাও এই বোমা-হামলার নিন্দা করেছে, তবে তারা এ জন্য কাউকে দায়ী বলে চিহ্নিত করেনি। যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘেরনিরাপত্তা পরিষদও এই বোমা হামলার তীব্র নিন্দা করেছে।

সিরিয়া সরকার নিজেরাও বৈরুতে ওই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে, তাদের তথ্যমন্ত্রী ওমরান আল-জুবি বলেছেন এটা একটা কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী হামলা। সিরিয়ার বিরোধী নেতা সাদ হারিরি গতকাল বৈরুতের খ্রীষ্টান-অধ্যুষিত আশরাফিয়ে এলাকায়চালানো ওই বোমা-হামলায় যে গোয়েন্দা-প্রধান উইসাম আল-হাসান নিহত হয়েছেন, তিনি ছিলেন সিরিয়া সরকারের কট্টর সমালোচক বলে পরিচিত সাদ হারিরির ঘনিষ্ঠ।

প্রতিবেশী সিরিয়ার সংঘাতকে কেন্দ্র করে লেবাননের বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভক্তি তৈরি হচ্ছে। অনেকে সিরিয়াতে প্রেসিডেন্ট আসাদের সরকারকে সমর্থন করছেন এবং তাদের মধ্যে বহু শিয়া আছেন– আর উল্টোদিকে লেবাননের বেশির ভাগ সুন্নিরাই সিরিয়ার বিদ্রোহীদের পাশেআছেন।

গতকালের বোমা-হামলা সেই বিভক্তিকেই আরও প্রকট করে তুলেছে, এবং আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে লেবাননের পরিস্থিতি।