আজ ২ অক্টোবর। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা ও অহিংস আন্দোলনের প্রবর্তক শান্তিকামী নেতা মোহন দাস করম চাঁদ গান্ধীর ১৪২তম জন্মদিন ।

 ১৮৬৯ সালের ২ অক্টোবর ভারতের গুজরাট রাজ্যের পরবনদার শহরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৭ সালের ১৫ জুন জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ২ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। জাতিসংঘের সব সদস্য দেশ এ দিবস পালনে সম্মতি জ্ঞাপন করে।

মহাত্মা গান্ধী বিশ্ব মানবতার কাছে এক অবিস্মরণীয় নাম। বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর তাকে মহাত্মা বলে অভিহিত করেন। তিনি ছিলেন সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। এ আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অহিংস মতবাদ বা দর্শনের ওপর এবং এটি ছিল ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম চালিকাশক্তি, সারাবিশ্বে মানুষের স্বাধীনতা এবং অধিকার পাওয়ার আন্দোলনের অন্যতম অনুপ্রেরণা।
মহাত্মা গান্ধী ১৮৯১ সালে লন্ডনে আইন বিষয়ে পড়তে যান। বার-এট ল ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে একটি আইন কোম্পানির আইন পরামর্শকের চাকরি নিয়ে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে চলে যান। সেখানে অবস্থানকালে প্রবাসী ভারতীয়দের রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকার আদায়ের আন্দোলন শুরু করেন। এ সময় তিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে নানা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ১৯১৪ সালে গান্ধী ভারতে ফিরে আসেন এবং ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হন। পরবর্তীতে ১৯২১ সালে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বে চলে আসেন। এ সময়ে তিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের সূচনা করেন এবং অনেকবার কারাবরণ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে সামপ্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ার পর তিনি অনেক দাঙ্গা বিধ্বস্ত এলাকায় ভ্রমণ করেন দাঙ্গা থামানোর জন্য। দেশ ভাগ হওয়ার পরেও সুরাবর্দির অনুরোধে নোয়াখালীতে সামপ্রদায়িক দাঙ্গা থামানোর জন্য বেশ কিছুদিন অবস্থান করেন গান্ধীজী।
১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি এক প্রার্থনা সভায় নাথুরাম গডসে নামের এক ব্যক্তির গুলিতে গান্ধীজী নিহত হন।

আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস উপলক্ষে শান্তি শোভাযাত্রা, সমাবেশ, আলোচনা সভা, সেমিনারসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মহাত্মা গান্ধী হিউম্যান সেন্টারের উদ্যোগে সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বের হবে শান্তি শোভাযাত্রা ও সম্প্রীতি মিছিল।