নির্বাচনকালীন সরকারে বিরোধী দলকে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া।
তিনি বলেছেন, “কোনো অর্ন্তর্বতীকালীন নয়, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হতে হবে। নইলে কোনো নির্বাচনই হতে দেওয়া হবে না।”
সোমবার বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাব আয়োজিত ইফতার পূর্ববর্তী আলোচনা অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন এই কথা বলেন।
লন্ডনে বিবিসি বাংলা সার্ভিসকে দেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারের পর এটাই খালেদা জিয়ার প্রথম প্রতিক্রিয়া।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি পুনর্বহালের দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসা প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নির্বাচনের সময় সরকার গঠনে তারা (বিরোধী দল) যদি অংশীদারিত্ব চায়, সেটা আমরা দিতে পারি। সবাই মিলে আমরা (নির্বাচন) করতে পারি। তখন একটা ছোট মন্ত্রিসভা করে ইলেকশন করতে পারি।”
গত বছরের ৩০ জুন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। এরপর থেকে আন্দোলন করে আসছে বিএনপিসহ বিরোধী দল। তাদের যুক্তি, নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না।
খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারকে ‘ব্যর্থ ও অযোগ্য’ অভিহিত করে বলেন, “দেশের জনগণের এখন দাবি, এই সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে। নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।
“অন্য কোনো উপায়ে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। নির্দলীয় সরকার ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে নির্বাচন হলে তাতে কোনো রাজনৈতিক দল অংশ নেবে না।”
পদ্মা সেতুর প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের তোলা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, “বর্তমান সরকার লুট করে দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করছে। তারা এখন বিশ্ববাসীর কাছে বিশ্বচোর হিসেবে পরিচিত হয়েছে।”
“দেশের মানুষ ভালো নেই। নানাভাবে তারা কষ্টে দিন কাটাচ্ছে,” বলেন তিনি।
বিরোধী দলের আন্দোলনে সব পেশাজীবীদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, “আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, দেশকে রক্ষার জন্য ঈদের পর আন্দোলনে নামব। এতে আমি সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে পাশে চাই।”
সংসদের এলডি ভবনে আয়োজিত এই ইফতার মাহফিলে সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মিজানুর রহমান সিনহা, ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম আজিজুল হক, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলাম দোলন, ড্যাব সহসভাপতি এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু ও ফরহাদ হালিম ডোনার বক্তব্য রাখেন।
ইফতার অনুষ্ঠানে আরো ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক এম এ মাজেদ, বিএনপি নেতা আর এ গনি, মওদুদ আহমদ, মাহবুবুর রহমান, এম কে আনোয়ার, জমিরউদ্দিন সরকার, আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, খন্দকার মাহবুব হোসেন, এলডিপি চেয়ারম্যান অলি আহমদ প্রমুখ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান মিয়া, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদিন, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুস শহিদ, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের প্রধান সেলিম ভূঁইয়া, চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলাম, ড্যাব মহাসচিব অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(এ্যাব) সভাপতি আ ন হ আখতার হোসেন, সাংবাদিক শফিক রেহমান, মাহফুজউল্লাহও ইফতারে অংশ নেন।