জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন বলেছেন,  উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন স্থগিত করার দাবি যুক্তিযুক্ত নয়। আগামী ২০ জুলাই উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন হবেই। ইতিমধ্যে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।গত ১৬ জুলাই সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনের যৌক্তিতা ও বৈধতা প্রশ্নে তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ীই নির্বাচন হচ্ছে।

আইন তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩-এর ১৯(২) ধারা অনুযায়ী মেয়াদ উত্তীর্ণ সদস্যদের স্থলে পরবর্তী ‘সাকসেসর’ না আসা পর্যন্ত পূর্ববর্তী সদস্যদের মেয়াদ বহাল আছে। সুতরাং বর্তমান সিনেট সদস্যদের দিয়ে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবি অনুযায়ী উপাচার্য নির্বাচনের আগে ডিন, সিন্ডিকেট, সিনেট, জাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষকদের দাবি অনুযায়ী উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন স্থগিত করতে পারলে কর্তৃপক্ষ স্বস্তিবোধ করত; কিন্তু বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে সেটা সম্ভব নয়। তাছাড়া সিনেটে বেশ কয়েকটি ক্যাটাগরি আছে। সে সব ক্যাটাগরিতে অতিদ্রুত নির্বাচন করা সম্ভব নয়। বিশেষ করে রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি ও জাকসু প্রতিনিধি নির্বাচন খুবই সময়সাপেক্ষ বিষয়।

দীর্ঘ আট বছর ধরে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন হয়নি। এজন্য সর্বাগ্রে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন হওয়া বাঞ্ছনীয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রশাসনের অনুরোধ উপেক্ষা করে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক, একাডেমিক ও গবেষণা কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি করে গণতান্ত্রিক অধিকারের অপচর্চা করছেন।

এদিকে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন স্থগিতের দাবিতে সম্মিলিত শিক্ষক পরিষদের শিক্ষকরা প্রশাসনিক ভবনে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। সকাল ৭টা থেকে প্রশাসনিক ভবনের তিনটি প্রবেশ দ্বারে শিক্ষকরা অবস্থান নেন। বেলা ২টা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করেন। শিক্ষকদের বাধার কারণে প্রশাসনিক ভবন দ্বিতীয় দিনের মতো তালাবদ্ধ ছিল।

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, অধ্যাপক এ টি এম আতিকুর রহমান, অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন, অধ্যাপক হানিফ আলী, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, অধ্যাপক রশীদ হারুন, ড. শরীফ উদ্দীন, মীর ফেরদৌস হোসাইন, লুৎফুল এলাহী লিটু প্রমুখ। শিক্ষকরা মঙ্গলবার ও বুধবার কর্মবিরতিসহ সর্বাত্মক ধর্মঘট এবং বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের সর্বাত্মক অবরোধ ও অনশন কর্মসূচি পালন করবেন।