রূপচর্চা করেন না এমন রমণী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। নিজেকে সুন্দর দেখানোর জন্য, একটু ফিটফাট থাকার জন্যই তারা রূপচর্চা করেন। কিন্তু এটি করতে গিয়ে নিজের অজান্তেই তারা নিজেদের ক্ষতি করে ফেলছেন। রূপচর্চা সামগ্রী তৈরির অনুষঙ্গ একটি রাসায়নিক উপাদান তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দিচ্ছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্ন ধরনের রূপচর্চা সামগ্রী ব্যবহারে নারীদের ডায়াবেটিসে
আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
রূপচর্চা উপকরণে একটি রাসায়নিক থাকে, যেটির নাম থালেইটস। এই অন্তঃস্রাবী রাসায়নিকটি রূপচর্চায় ব্যবহার্য দ্রব্যাদি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। ময়েশ্চারাইজার, নেইল পলিশ, সাবান, হেয়ার স্প্রে ও সুগন্ধি তৈরিতে এটি ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের আঠা, ইলেকট্রনিক্স, খেলনায় এটি ব্যবহৃত হয়। গবেষকরা বলছেন, শরীরে এই থালেইটসের মাত্রা যত বেশি হবে, নারীদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তত বেশি হবে।
ব্রিটেনের বার্মিংহামের উইম্যান হাসপাতালের গবেষক তামারা জেমস টড দুই হাজার ৩৫০ নারীর ওপর একটি গবেষণা চালান। তিনি দেখেন, যাদের প্রস্রাবে থালেইটসের মাত্রা যত বেশি তার ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তত বেশি। যেসব নারীর শরীরে মনো বেনজাইল থালেইট এবং মনো আইসোবুটাইল থালেইটের উপস্থিতি যত বেশি তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার মাত্রা অন্যদের তুলনায় দ্বিগুণের মতো। যাদের শরীরে মনো (৩-কার্বোক্সিপ্রোপাইল) থালেইট উচ্চমাত্রায় রয়েছে তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা ৬০ শতাংশের মতো।
এ বিষয়ে প্রধান গবেষক জেমস টড বলেন, থালেইটস ও ডায়াবেটিসের সম্পর্ক বোঝার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ। তিনি বলেন, রূপচর্চা সামগ্রী ছাড়াও কিছু চিকিৎসা উপকরণেও থালেইটস ব্যবহৃত হয়। ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত দ্রব্যাদিতেও থালেইটস রয়েছে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীদের শরীরে থালেইটসের অধিক পরিমাণে উপস্থিতির এটিও একটি কারণ হতে পারে। ফলে বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।