চীনের এক মা কাউ মিনজুন। হুইলচেয়ারে বসে কাটে তাঁর দিন। তিনি স্বপ্ন দেখলেন, রাজধানী বেইজিং থেকে জিশুয়াংবানা এলাকায় বেড়াতে যাবেন। একমাত্র ছেলে ফান মেং (২৬) ঠিক করলেন, মায়ের এ স্বপ্ন পূরণ করেই ছাড়বেন। একদিন সত্যিই হুইলচেয়ারে বসা মা ও তাঁদের পোষা কুকুরটা নিয়ে রওনা হলেন তিনি।
হেঁটে হেঁটে ১০০ দিনের মধ্যে পৌঁছে গেলেন মায়েরসেই স্বপ্নের ঠিকানায়। গত শনিবার ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’র প্রতিবেদনে এ কথা জানা যায়। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার বরাত দিয়ে ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’র খবরে বলা হয়, শৈশব থেকে পক্ষাঘাতে ভুগছেন কাউ মিনজুন। এ কারণে বেইজিং ছেড়ে কোথাওযাওয়া হয়নি তাঁর।
তবে টেলিভিশন ও সংবাদপত্রে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ইউনান প্রদেশের জিশুয়াংবানা এলাকা সম্পর্কে জানতে পেরে সেখানে যাওয়ার খুব ইচ্ছা হয় তাঁর। সেই ইচ্ছা পূরণ হয় ছেলে ফানের সহযোগিতায়।
১০ বছর আগে স্বামীর সঙ্গেছাড়াছাড়ি হয়ে যায় মিনজুনের। এর পর থেকে ছেলেকে নিয়েই তাঁর ছোট্টসংসার। সরকারি ভাতা আর আত্মীয়স্বজনের সাহায্যের ওপর নির্ভর করেজীবন কাটছে তাঁদের।
একটি দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করতেন ফান। মায়ের শখ পূরণ করতে সেই চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। গত ১১ জুলাই তিনি মা মিনজুন ও তাঁদের পোষা কুকুরটি নিয়ে পায়ে হেঁটে জিশুয়াংবানার উদ্দেশে রওনা হন। চীনের হেবেই, হেনান, হুবেই, হুনান, গুইঝাউ ও ইউনান প্রদেশের মহাসড়ক ধরে তাঁরা গন্তব্যের দিকে এগিয়ে চলেন।
রাতে সস্তা কোনো হোটেল বা নিজেদের তাঁবুতেঘুমাতেন তাঁরা। চলার পথে স্থানীয় অনেকে খাবার দিততাঁদের। আবার কোনো কোনো হোটেল তাঁদের বিনা মূল্যেথাকতেও দিত। এই সফরে মিনজুন ও ফ্যানের খরচ হয়েছে প্রায় আট হাজার ইউয়ান (এক হাজার ২৭১ মার্কিন ডলার)।
১০০ দিন পায়ে হেঁটে অবশেষে গত বৃহস্পতিবার জিশুয়াংবানায় পৌঁছান তাঁরা। সেখানে স্থানীয় লোকজন নাচগানের মধ্য দিয়ে তাঁদের স্বাগত জানায়। ছেলের উত্সাহে শেষ পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত স্থানে পৌঁছাতে পেরে খুব খুশি মিনজুন। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেকে ছাড়া কখনোইকাজটি করা সম্ভব হতো না।’