মির্জাগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ন এলাকা খরায় পুড়ছে। এ কারনে আমন ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। চলতি আমন মৌসুমে মির্জাগঞ্জ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ১ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে উফসী ও ১০ হাজার হেক্টরে স্থানীয় জাতেরসহ মোট ১১ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আমন ফসলের আবাদ হয়েছে। ইতো মধ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী উফসী ৪০০ হেক্টর জমির ফসল খরা কবলিত হয়েছে। কারন উফসী জাতের আমন ফসল উঁচু জমিতে আবাদ করা হয়। এরপর স্থানীয় ফসলের আগাম জাতের মধ্যে মৌলতা ও দুধ কলম ধানের ক্ষেত খরার কারনে পড়ার তীব্র আশঙ্কা রয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, সেচ ও নিকাশ ব্যবস্থার অপ্রতুলতাই এর জন্য দায়ী। পর্যাপ্ত স্লুইস, কালভার্ট এবং খাল খনন না হওয়ার কারনে চলতি আমন মৌসুমে ফসলের ফুল ও দুধ অবস্থায় অনেক মাটিতে জো-থাকবেনা। ফলে আমনের কাঙ্খিত ফলন না পাওয়ার ব্যাপারে চাষীরা শংকিত। এর পরিনতি শুধু খরিপ-২ (আমন) মৌসুমেই সীমাবদ্ধ না থেকে রবি ফসলেও প্রভাবিত হবে বলে স্থানীয় অভিজ্ঞ মহল মনে করেন। মির্জাগঞ্জ উপজেলার কম বেশি ৫০টি খাল ফসলে সেচ ও নিকাশ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। স্লুইস গেট গুলি নির্মানে পরিকল্পনা তৈরীতে কৃষি বিভাগের সাথে সমন্বয়হীনতার কারনে অনেক ক্ষেত্রেই উৎস মুখ ভরাট এবং তৎ পরবতর্ী প্রয়োজনে পানি না উঠা এবং জোয়ারের পানি নিষ্কাশিত হতে না পারায় জলাবদ্ধতারও সৃষ্টি হয়। কৃষি সমপ্রসারন বিভাগ জানায়, খরা কবলিত এলাকায় খরার প্রভাবে ফসলের ফলন সম্ভাব্য কম হওয়ার পরিমান ৪০০ টন চাল। যার বাজার মূল্য ১ কোটি ২০লক্ষ টাকা হবে। মির্জাগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ জাকির হোসের তালুকদার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সেচ ও নিকাশ ব্যবস্থা জারী রাখা গেলে আগাম আমন ফসল আবাদ এবং এর পরে আগাম জাতের রবি ফসল যেমন- মশুর, আলু, সরিষা প্রভৃতি আবাদের দ্বারা উৎপাদন আরও বাড়ানো সম্ভব হত। খরা মোকাবেলায় চাষীদের সম্পূরক সেচ প্রদান এবং সকালে ফসলের মাঠে দড়ি টেনে শিশিরের পানি মাঠে পতিতঃ করানোর পরামর্শ দিলেও চাষীরা পুরোপুরি তা গ্রহন করতে পারছে না। কারন সেচের উৎস ও সেচ যন্ত্রের অপ্রতুলতার কারনে এ ব্যবস্থা পুরোপুরি কার্যকর করা যাচ্ছে না। অন্ততঃ কিউসেক পাওয়ার পাম্প এবং লম্বা পাইপের সরবরাহ দেওয়া গেলে প্রাথমিক ভাবে আপাততঃ আমন ফসলের উৎপাদন ঘাটতি মেটানো সম্ভব হত বলে তিনি মত প্রকাশ করেছেন।