সন্ত্রাসীদের তহবিল যোগানোর অভিযোগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদন্ত করলে তাতে সহায়তা করা হবে বলে জানিয়েছে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশের দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনে তহবিল যোগানো হয়েছে- মার্কিন সিনেট এমন অভিযাগ আনার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক বুধবার ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেয়। মার্কিন সিনেটের তদন্ত প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ আনা হয়।

এই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ইসলামী ব্যাংক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান দাবি করেন, ইসলামী ব্যাংক কোনো ধরনের ‘সন্দেহজনক’ লেনদেনে জড়িত নয়। মার্কিন সিনেটের প্রতিবেদনকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলেও উল্লে¬খ করেন তিনি।

“বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে তদন্ত করলে সব ধরনের সহযোগিতা করবো আমরা। সহযোগিতা না করার কারণ নেই”, বলেন মান্নান।

ইউরোপের সবচেয়ে বড় ব্যাংক এইচএসবিসির নানা অনিয়ম নিয়ে মার্কিন সিনেটের ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামী ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনকে তহবিল জোগানোর অভিযোগ থাকলেও এইচএসবিসি তাদের আর্থিক সেবা দিয়েছে।

বুধবার জাতীয় মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্ণর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, “২০০৫ ও ২০০৭ সালে এ রকম ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংক পদক্ষেপ নিয়েছিল। আমরা এইচএসবিসি ব্যাংকের ভূমিকা খতিয়ে দেখছি। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এর আগে ‘সন্দেহজনক’ লেনদেনের অভিযোগে ইসলামী ব্যাংকে একাধিকবার জরিমানা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ওই জরিমানার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আব্দুল মান্নান বলেন, “২০০৪ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমাদের কাছে জানতে চায়, আল হারামাইন ফাউন্ডেশনের নামে কোনো অ্যাকাউন্ট আছে কি না। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখি ওই রকম অ্যাকাউন্ট নেই।”

“পরে একটি শাখায় আল হারামাইন ফাউন্ডেশনের একটি অ্যাকাউন্ট পাওয়ায় তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক জরিমানা করে।”

আরেক দফা জরিমানার কারণ ব্যাখ্যা করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, “শায়খ আবদুর রহমানের নামে কোনো অ্যাকাউন্ট আছে কী না, তা কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানতে চেয়েছিল। ওই নামে কোনো হিসাব ছিল না। কিন্তু সাইদুর রহমান নামে একটি ইন-অপারেটিভ অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ স্থানান্তরের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক জরিমানা করে।”

কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর আতিউর রহমান বুধবার জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক মার্কিন সিনেটের প্রতিবেদনটি বিশ্লেষণ করে দেখছে। যাচাই-বাছাই শেষে এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।