ফিনল্যান্ডভিত্তিক স্মার্টফোননির্মাতা প্রতিষ্ঠান নকিয়া গত বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় প্রান্তিকের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এপ্রিল-জুনে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা বাবদ ক্ষতি হয়েছে ১০১ কোটি ডলার, যা বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসের দ্বিগুণ। এ বিপুল পরিমাণ লোকসানের প্রতিবেদন প্রকাশের পর দিন ঋণমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিচ নকিয়ার ঋণমান বিবি প্লাস থেকে বিবি মাইনাসে নামিয়ে এনেছে। খবর দ্য নেক্সট ওয়েব, জেডটিনেট ও এএফপির।
প্রান্তিক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিফেন ইলোপ বলেন, দ্বিতীয় প্রান্তিকটি নকিয়ার জন্য খুব কঠিন ছিল। এ প্রান্তিকে নকিয়ার মোট লোকসান হয়েছে ১৭৪ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় চার গুণ বেশি। গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে নকিয়ার লোকসান ছিল ৩৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার। শুধু পরিচালনার ক্ষেত্রেই প্রতিষ্ঠানটির লোকসানের পরিমাণ ১০১ কোটি ডলার। ডাও জোনস নিউজওয়্যারের বক্তব্য অনুযায়ী ক্ষতির পরিমাণ ৬৫ কোটি ৪০ লাখ ইউরো হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে লোকসানের পরিমাণ হয়েছে তার দ্বিগুণেরও বেশি।
১৪ বছর ধরে বিশ্বের এক নম্বর সেলফোন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নকিয়ার রাজত্ব চললেও এ বছর স্যামসাং ফিনল্যান্ডের প্রতিষ্ঠানটিকে শীর্ষস্থান থেকে সরিয়ে দেয়। বাজারে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে গত বছর মাইক্রোসফটের সঙ্গে জোট বাঁধে নকিয়া। মাইক্রোসফটের সঙ্গে অংশীদারির অংশ হিসেবে নকিয়া সিমবিয়ানচালিত স্মার্টফোন বানানো বন্ধ করে দেয়। এখন প্রতিষ্ঠানটির লুমিয়া সিরিজের স্মার্টফোনগুলোয় মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ফোন অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকের প্রতিবেদন প্রকাশের পর গত শুক্রবার নকিয়ার ঋণমান কমিয়েছে ফিচ। প্রতিষ্ঠানটির দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বিবি প্লাস থেকে বিবি মাইনাসে নিয়ে এসেছে ফিচ। দ্বিতীয় প্রান্তিকশেষে নকিয়ার হাতে রয়েছে ৪২০ কোটি ইউরো। কিন্তু কোম্পানি পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে এ বছর আরও অর্থ ব্যয় হবে বলে বছরের শেষ দিকে প্রতিষ্ঠানটির হাতে ২৫০ কোটি ডলার থাকবে বলে জানিয়েছে মরগান স্ট্যানলি।
নকিয়াকে নিয়ে এখন শঙ্কিত বিশ্লেষকরাও। গত ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত নকিয়ার শেয়ারের দাম ৮০ শতাংশেরও বেশি কমেছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, একসময় সেলফোনের বাজারে দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করা নকিয়া এখন পেটেন্টসর্বস্ব হয়ে পড়েছে। অনেকেই এখন নকিয়ার শেয়ারের দাম ১-৩ ইউরোর মধ্যে ধরে রেখেছেন। প্রতিষ্ঠানটির পেটেন্টগুলো বিক্রি করলে শেয়ারপ্রতি সমপরিমাণ অর্থ পাওয়া যাবে।