বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন নীতিমালার আওতায় শর্তারোপের মাধ্যমে আরো নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া কিছু সংশোধনসহ বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের খসড়া নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পর্ষদের সভায় নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স প্রদানের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যদের বৈঠকে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ নতুন ব্যাংক স্থাপনে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে কিছু শর্ত সাপেক্ষে সেগুলো অনুমোদন পাবে। তবে আবেদনকৃত ব্যাংকগুলোর মধ্যে কতটি ব্যাংককে অনুমোদন দেয়া হবে তা নিয়ে ওই বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, নতুন ব্যাংকের জন্য একটি নীতিমালা অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ নীতিমালায় নতুন কিছু শর্ত যোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংকগুলোকে অনুমোদন পাওয়ার জন্য এক অনুপাত এক হারে গ্রামে ও শহরে শাখা খোলা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
জানা গেছে, ব্যাংক কোম্পানি আইন-১৯৯১ অনুযায়ী ব্যাংকের লাইসেন্স দেয়ার এখতিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার-১৯৭২ এ কিছু নির্দেশনা দেয়ার ক্ষমতা সরকারের ছিল। কিন্তু ২০০৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডারে সংশোধনী এনে সরকারের নির্দেশনা দেয়ার ক্ষমতা তুলে নেয়া হয়। এ সিদ্ধান্তের আগে দেশের শীর্যস্থানীয় অর্থনীতিবিদরা রাজনৈতিক বিবেচনায় নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার তীব্র বিরোধিতা করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নতুন ব্যাংকের জন্য আবেদনকৃতদের মধ্যে অধিকাংশই সরকারের সমর্থকগোষ্ঠী। মূলত এদের খুশি করার জন্যই নিয়ম ভেঙে তাদের নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স প্রদান করা হবে এটা প্রায় নিশ্চিত। এখন শুধু আনুষ্ঠিনকতা বাকি।
নতুন ব্যাংকের জন্য আবেদন করেছেন এমন রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের তালিকায় আছেন আওয়ামী লীগের সাংসদ ও সরকারি হিসাবসংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, তার প্রস্তাবিত ব্যাংকের নাম- দি ফার্মার্স ব্যাংক লিমিটেড। সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপসের মধুমতি ব্যাংক লিমিটেড, জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর সেলফ এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংক, ড. এস এম শওকত আলীর ক্যাপিটাল ব্যাংক, এনজিও ব্যক্তিত্ব অধ্যাপিকা ড. হোসনে আরা বেগমের টিএমএসএস ক্ষুদ্র পুঁজি ব্যাংক, ড. মো. শামসুল হক ভূঁইয়ার অ্যাপোলো ব্যাংক স্থাপনের আবেদন জমা আছে। এ ছাড়া বিআরবি গ্রুপের মজিবর রহমান, রূপায়ণ গ্রুপের লিয়াকত আলী খান মুকুল, শেলটেকের কুতুবউদ্দিন আহমেদ বর্তমান সরকারের আমলে নতুন ব্যাংকের জন্য আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে নতুন ব্যাংক কাকে কাকে দেয়া হবে সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকারের শীর্ষ মহল।