পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বাজার স্থিতিশীলকরণ তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)। গতকাল বৃহস্পতিবার এফবিসিসিআই’র উদ্যোগে আয়োজিত যৌথ সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মার্চেন্ট ব্যাংক ও স্টক ব্রোকার প্রতিষ্ঠান থেকে মার্জিন ঋণ নিয়ে কেনা শেয়ারের বিনিময়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এই তহবিলের ইউনিট গ্রহণ করবেন। এসব বিনিয়োগকারীর নেয়া মার্জিন ঋণের জন্য নতুন করে কোন রকম সুদ গ্রহণ করা হবে না। একইসঙ্গে এসব ঋণের শ্রেণীকরণ প্রক্রিয়া দু’ বছরের জন্য মুলতবি রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানানো হবে বলে এফবিসিসিআই সভাপতি একে আজাদ জানান। তিনি বলেন, মার্চেন্ট ব্যাংক, স্টক ব্রোকার-ডিলার, তালিকাভুক্ত কোম্পানি, বাণিজ্যিক ব্যাংক, বীমা কোম্পানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও প্রবাসী বাংলাদেশী এবং উচ্চ আর্থিক ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা। এরা এই তহবিল গঠনের জন্য অর্থ বিনিয়োগ করবেন।  যৌথ সভা শেষে আয়োজিত আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, যেসব বিনিয়োগকারী মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে মার্জিন ঋণ নিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন তারা বর্তমান পরিস্থিতিতে বড় ধরনের সঙ্কটে রয়েছেন। ঋণ নেয়ার কারণে তাদের ৫ থেকে ৬ হাজার কোটি টাকার শেয়ার বন্ধক রয়েছে। বাজারে দরপতনের কারণে এসব শেয়ারের দর এমন পর্যায়ে চলে এসেছে যে, ঋণ আদায়ের জন্য মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের শেয়ার বাধ্যতামূলক বিক্রি (ফোর্স সেল) করে দিচ্ছে। এতে একদিকে অনেক বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন, অন্যদিকে বাজারে শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এ অবস্থায় বাজার সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে পরামর্শ করে একটি সমাধান বের করার উদ্যোগ নেয়া হয়। আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে মার্জিন ঋণের সমস্যা সমাধান ও পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য একটি বাজার স্থিতিশীলকরণ তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই তহবিল পরিচালনার জন্য একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি অনুমোদনের জন্য এসইসি’র কাছে আবেদন করা হবে। তহবিল গঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে বিপুলসংখ্যক বিনিয়োগকারীর লোকসান পুষিয়ে নেয়ার সুযোগ করে দিতেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পুঁজিবাজার গতিশীল করতে অন্যান্য উদ্যোগ সম্পর্কে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো শিগগিরই নতুন করে ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে সম্মত হয়েছে। এছাড়া বীমা কোম্পানিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও ২০০ কোটি টাকার মতো বিনিয়োগ করবে। ব্রোকার ও ডিলারদেরও শেয়ার কিনতে বলা হয়েছে। সবাই মিলে বাজারে গতিশীলতা আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মার্চেন্ট ব্যাংকের ফোর্স সেল বন্ধ ও আগামী দু’বছর মার্জিন ঋণের সুদ গ্রহণ বন্ধ রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তিনি সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।