গত ১০ মাস ধরে শেয়ার বাজার যেন বিক্ষোভ আর প্রতিবাদের জায়গায় পরিণত হয়েছে৷ সেখানে প্রায় প্রতিদিন পুঁজি হারানো ক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছে৷ এজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা৷
১৯৯৬ সালে বাংলাদেশের শেয়ার বাজারে প্রথম ধ্বস নামে৷ অনেক বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে পথে বসেন৷ তারপর শেয়ার বাজার নিয়ে ছিল না কোন আলোচনা৷ যেন হঠাৎ আলোর ঝলকানি দিয়ে দু:খজনক পরিণতির মাধ্যমে হারিয়ে যায় শেয়ার বাজার৷ এরপর গত চার বছর ধরে আবার আলোচনায় আসে শেয়ার বাজার৷  ২০০৮ সালে লেনদেনের সূচক ৩০০০-এ পৌঁছায়৷ ২০০৯ সালে ৪০০০৷ এবং ২০১০ সালের ৫ই ডিসেম্বর সূচক ৮৯১৮তে পৌঁছে ইতিহাস সৃষ্টি করে৷ আর তার ১০ দিনের মাথায় শুরু হয় দরপতন৷ নামে ধ্বস৷
শেয়ার বাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. আবু আহমেদ বলেন জেলায় জেলায় ট্রেডারদের শাখা অফিস খোলার মাধ্যমে লাখ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীকে শেয়ার বাজারে টেনে আনা হয়৷ কিন্ত বাজারে শেয়ারের সরবরাহ বাড়ানো হয়নি৷ আর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান শেয়ার বাজারে লাগামহীন বিনিয়োগ শুরু করে৷ আর সেই সময়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা তার ভুমিকা পালন না করায় শেয়ার বাজারে দু:খজনক অবস্থার সৃষ্টি হয়৷
শেয়ার বাজারে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগের লাগাম টেনে ধরতে তখন বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের শেয়ার সীমা নির্দিষ্ট করে দেয়৷ তবে তাতে রক্ষা পায়নি লাখ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ৷ কারন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান শেয়ার বিক্রি করে লাভসহ বাজার থেকে বের হয়ে যায়৷ তারা প্রচুর ব্যবসা করে৷ জানালেন ঢাকা স্টকএক্সচেঞ্জের সভাপতি শাকিল রিজভি৷
শেয়ার বাজারকে চাঙ্গা করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি ও অর্থ মন্ত্রণালয়সহ  বাজেটেও বেশ কিছু শেয়ার বাজার বান্ধব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ তবে তাতে পরিস্থিতির কোন উন্নতি হচ্ছেনা৷ প্রতিদিনই সুচকের পতন ঘটছে৷ হঠাৎ হঠাৎ সুলক্ষণ দেখা দিলেও তা স্থায়ী না হওয়ায় বাজারে আস্থা ফিরে আসছেনা৷ তাই বলতে গেলে বাজার ক্রেতা শূন্য৷ তবে শাকিল রিজভী আশাবাদী৷ তিনি বলেন বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য্য ধরতে হবে৷ বাজার তার আপন গতিতে চলবে৷ বাংলাদেশের শেয়ার বাজারের যথেষ্ঠ সম্ভাবনা আছে৷
আর সেই আশাতেই আছেন বিনিয়োগকারীরা৷ তারাও আশা করেন হয়তো আবার বাংলাদেশের শেয়ার বাজার চাঙ্গা হবে৷ ফিরে পাবে হারানো পুঁজি৷