বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র সপ্রসারণ প্রকল্পে আরো ৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান শেভরন।  এটি বাংলাদেশে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় বিদেশি বিনিয়োগ।

সোমবার হোটেল রূপসী বাংলায় নতুন বিনিয়োগের এ ঘোষণা দিয়ে শেভরন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট জিওফ স্ট্রং বলেন, “বাংলাদেশে মোট গ্যাস উৎপাদনের প্রায় ৫০ শতাংশ (প্রতিদিন ১ দশমিক ১ বিলিয়ন কিউবিক ঘনফুট) আসে শেভরন থেকে। বিবিয়ানা স¤প্রসারণ প্রকল্পে ৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগের পর ২০১৪ সালের মধ্যে প্রতিদিন আরো ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়বে।”

বাংলাদেশে শেভরনের ১০০ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ রয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানিয়েছেন।

দেশের তিনটি গ্যাসফিল্ড জালালাবাদ, মৌলভীবাজার এবং বিবিয়ানায় গ্যাস উত্তোলন করছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান শেভরন। বর্তমানে দেশে প্রাকৃতিক গ্যাস চাহিদার অর্ধেকের বেশি উৎপাদন করছে এই প্রতিষ্ঠান।

এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের স¤প্রসারণ ছাড়াও অতিরিক্ত কূপ খনন করা হবে।

জিওফ স্ট্রং বলেন, “নতুন বিনিয়োগের পর বিবিয়ানা প্রকল্পে কনডেনসেটের (পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ) উৎপাদন বেড়ে প্রতিদিন ৪ হাজার ব্যারেল হবে। এতে তরল তেল আমদানি কমায় প্রতিবছর ২০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ কমবে।

“ফলে প্রকল্প থেকে ব্যবহারযোগ্য অনেক জ্বালানি আসবে, যা বাংলাদেশে শুধু শেভরনের ব্যবসাই বাড়াবে না, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসেও ভূমিকা রাখবে।”

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, “দেশে প্রতিদিন ২ হাজার ২০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। তারপরও আমরা অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস দিতে পারছি না। বাড়তি গ্যাস উৎপাদিত হলে শিল্প প্রতিষ্ঠানে সহায়তা করবে।”

বর্তমানে দেশে দৈনিক ২৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে প্রায় ৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে।

বাংলাদেশে জ্বালানি সংকট নিরসনে এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।

তিনি বলেন, “আমরা যদি বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করতে পারি তাহলে বিদ্যুতের দাম অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব।”

বর্তমানে দেশে উৎপাদিত ৬০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের মধ্যে ৫৫ শতাংশই আসে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করে।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদুত ড্যান ডব্লিউ মজীনা।