ভারতের বিরুদ্ধে সদ্যসমাপ্ত টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে দুটি লক্ষ নিয়ে যাত্রা শুরু করে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। এর মধ্যে টেস্ট সিরিজে ভারতকে অন্তত ২-০ অথবা ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান দখল এবং উপমহাদেশে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে দলের বাজে পারফরমেন্স ভুলে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিজেদের অবস্থার উন্নয়ন। দুই ৰেত্রেই দুর্দান্তভাবে সফলতা ছিনিয়ে এনেছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। আর যাঁর দীৰায় দীৰিত হয়ে তারা এ বিপুল সাফল্য পেয়েছে তিনি দলের প্রধান কোচ এ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। সিরিজ এখন অতীত হয়ে গেছে। এখন সামনের কথা ভাবতে হবে। তাই ভেবেছেন ফ্লাওয়ার। তিনি মনে করছেন ওয়ানডে সিরিজে তরম্নণ ক্রিকেটাররা যে নৈপুণ্য প্রদর্শন করেছে তা টেস্ট দলের সিনিয়র ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের বাড়তি স্পৃহা ও অনুপ্রেরণা যোগাবে। কার্ডিফে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ড পাহাড়সম টার্গেট তাড়া করে ১০ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটে জিতে যায়। ফলে সিরিজেও ৩-০ ব্যবধানে জয় পায় ইংল্যান্ড। এরপর ফ্লাওয়ার সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। তবে তিনি দলের সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, একটি মৌসুমের একটিমাত্র সিরিজে ভাল করাটাই যথেষ্ট নয়। তিনি আশঙ্কা বোধ করছেন এই ভেবে যে, মানসিকভাবে ক্রিকেটাররা এ চমৎকার জয়ের পর আত্মতুষ্টিতে ভুগতে পারে। কিন্তু তিনি দলের প্রতিটি ক্রিকেটারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, খেলোয়াড়রা যদি আত্মতৃপ্তির বশবতর্ী হয়ে গা-ছাড়া ভাব দেখায়, তবে অচিরেই তার জায়গায় অন্য কেউ স্থান করে নেয়। তাই ফ্লাওয়ার চান দলের সবাই আগামীতেও সদ্যসমাপ্ত সিরিজের মতোই নিজেদের মধ্যে জয়ের ৰুধা ধরে রাখবে আর এর অন্যথা হলে যে কেউ দলে তার অবস্থান হারাবে বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।
ফ্লাওয়ার মনে করেন জয়ের ৰুধা থাকাটা অনেক গুরম্নত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ এতে করে কঠোর পরিশ্রম করবার মানসিকতা তৈরি হয়। একজন ক্রিকেটারের মধ্যে জয়ের স্পৃহা থাকলে সে খুব ভোরে উঠেই নিজের দৰতার উৎকর্ষ সাধনের জন্য মাঠে নেমে পড়ে। তিনি বলেন, ‘আমি অবশ্যই দলের পারফরমেন্সে অত্যনত্ম উচ্ছ্বসিত। তবে এটা অতিৰুদ্র সময়ের জন্য একটা ভাল সময় কাটালাম আমরা। এজন্য আমাদের এ সিরিজ শুরম্নর আগে যে মানসিকতা ছিল তার বাইরে চলে আসা উচিত হবে না। যদি কেউ আত্মতুষ্টি ও সন্তুষ্টিতে ভোগে তবে তা বিপজ্জনক দিকে মোড় নিতে পারে। নিজের মধ্যে জয়ের জন্য বাড়তি ৰুধা না রাখলে অচিরেই সে দল থেকে ছিটকে পড়তে পারে অথবা তাকে বাদও দেয়া হতে পারে। আমাদের দর্শন হচ্ছে_ সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া এবং পেছনের কথা ভুলে গিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া। কেউ যদি পেছনের দিকে তাকায় তার পৰে ভবিষ্যত সফলতা অর্জনের পরিকল্পনা তৈরি করা সম্ভবপর হয় না। শেষ ম্যাচে নাটকীয়ভাবে ইয়র্কশায়ারের ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টো একাদশে জায়গা করে নেন। এরপর মাত্র ২১ বলে অপরাজিত ৪১ রানের এক বিধ্বংসী ইনিংস উপহার দিয়ে হয়ে যান ম্যাচসেরা। এর ফলে নিঃসন্দেহে দলে জায়গা করে নেবার ৰেত্রে কেভিন পিটারসেন ও ইয়ন মরগানের সঙ্গে আগামীতে বেয়ারস্টোর একটি প্রতিদ্বন্দিতার সৃষ্টি হবে। তাঁর ব্যাপারে ফ্লাওয়ার বলেন, ‘আমি কখনই এ রকম অভিষেক দেখিনি। নিজের প্রথম ম্যাচেই এত নিখুঁতভাবে এতসব চমৎকার স্ট্রোক খেলতে পারে না। তবে সে যেভাবে শুরম্ন করেছে ওই অবস্থানে নিয়মিতভাবেই তার ওপরে প্রত্যাশার একটি চাপ সৃষ্টি হবে। এ সিরিজে রবি বোপারা তার হৃত পারফরমেন্স ফিরে পেয়েছে। বেন স্টোকস নতুনদের মধ্যে তাঁর নিজের যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছেন। এছাড়াও শেষ ম্যাচে পেসার স্টিভেন ফিন জেমস এ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রডের অভাব বুঝতে দেননি। আরেক পেসার জেড ডার্নব্যাচও অনেক ভাল বোলিং করেছেন। তাই সব মিলিয়ে বর্তমান দলের সবাইকে নিয়েই বেশ সন্তুষ্ট ফ্লাওয়ার। তিনি বলেন, ‘আমরা ওয়ানডের সেরা দলের বিরম্নদ্ধে খেলেছি। কিন্তু তরম্নণ একটা দল কঠিন একটা পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়ে চমৎকার খেলেছে। আমি গত আড়াই বছর ধরে ইংল্যান্ডের হয়ে কাজ করছি।