আগের দিন ২০০ মিটার একক মিডলেতে স্বর্ণ জিতে গড়েছিলেন নতুন রেকর্ড। বৃহস্পতিবার সাঁতারের একক ইভেন্টে পরপর তিন অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জয়ের বিরল কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন মাইকেল ফেলপস। শুক্রবার রাতে সেই রেকর্ডেরই পুনরাবৃত্তি ঘটালেন মার্কিন এ জীবন্ত কিংবদন্তি। এদিন ১০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে স্বর্ণ জেতেন তিনি। ২০০৪-এর এথেন্স এবং বেইজিংয়েও এ ইভেন্টে স্বর্ণ জিতেছিলেন ফেলপস। তার মানে ২০০ মিটার একক মিডলের পর ১০০ মিটার বাটারফ্লাইয়েও পরপর তিন অলিম্পিকে স্বর্ণ জয়ের নজির গড়লেন তিনি।
৪০০ মিটার একক মিডলেতে স্বদেশি রায়ান লোচেটের কাছে হেরে যাওয়ার প্রতিশোধটা বৃহস্পতিবার নিয়েছিলেন ২০০ মিটার একক মিডলেতে। লোচেটকে হারিয়েই স্বর্ণ জিতেছিলেন তিনি। আরেকটা প্রতিশোধ নিয়ে ফেললেন শুক্রবার। প্রতিশোধ দক্ষিণ আফ্রিকার চ্যাড লি ক্লসের বিপক্ষে। ২০০ মিটারে বাটারফ্লাইয়ে হিরো ফেলপসকে বিস্মিত করে স্বর্ণ জিতেছিলেন এ প্রোটিয়া অ্যাথলেট। শুক্রবার ১০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে সেই ক্লসকে হারিয়েই স্বর্ণ জিতলেন ফেলপস। পার্থক্য-ক্লস ২০০ মিটার বাটারফ্লাই জিতেছিলেন ফেলপসের চেয়ে মাত্র এক সেকেন্ডের পাঁচশ ভাগের এক ভাগ বেশি সময় নিয়ে। আর শুক্রবার ফেলপসের জয়টা পরিষ্কার। ক্লসকে হারালেন ০.২৩ সেকেন্ড সময় বেশি নিয়ে। ফেলপস সময় নেন ৫১.২১ সেকেন্ড। আর ক্লস ১০০ মিটার শেষ করেন ৫১.৪৪ সেকেন্ডে। লন্ডনে এ পর্যন্ত পাঁচটি পদক জিতেছেন ফেলপস। অলিম্পিকে তার মোট পদক দাঁড়াল ২১টি। এর মধ্যে ১৭টি স্বর্ণ। লন্ডন অলিম্পিকের পরেই অবসরে যাচ্ছেন তিনি। তার মানে শুক্রবারই ছিল তার ক্যারিয়ারের শেষ একক। আর গত রাতেই তিনি অংশ নিয়ে ফেলেছেন ক্যারিয়ারের শেষ ইভেন্টটি। ৪–১০০ মিটার রিলেতে হয়তো স্বর্ণও জিতে নিয়েছে তার দল যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে ক্যারিয়ারের শেষ একক স্বর্ণ জিতে বেশ খুশি মাইকেল ফেলপস। বলেন, ‘সর্বশেষ ব্যক্তিগত ইভেন্টটি ভালোভাবে শেষ করতে পারায় আমি খুশি। যদিও টার্ন নেওয়া ও শেষটা ভালোভাবে পারিনি। তবে চ্যাম্পিয়নশিপ ধরে রাখতে পারায় আমি সন্তুষ্ট।’ প্রথমবারের মতো অলিম্পিকে অংশ নিতে এসেই দারুণ চমক দেখিয়েছেন দক্ষিণ আাাফ্রিকার চ্যাড লি ক্লস। তার প্রশংসা করে ফেলপস বলেন, ‘আগামীতে সে কী করে সেটা দেখাই হবে মজার ব্যাপার।’ ফেলপস স্বীকার করেন, প্রথম দুটি ইভেন্টে ভালো করতে না পারায় বেশ হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু পরপর তিনটি স্বর্ণ জেতায় সেই হতাশা কেটে গেছে। তার কথা, ‘আমি এখন খুশি। এখন হাসতে পারি আবার মজাও করতে পারি।’
এদিকে স্বর্ণ না জিতেও দারুণ খুশি চ্যাড লি ক্লস। কারণ হেরেছেন তো যার-তার কাছে নয়, হিরোর সঙ্গে। এতে দুঃখ নেই, আছে গর্ব সে কথাই যেন বলেছেন ক্লস, ‘আমি যখন সাঁতরাই তখন তা স্বর্ণপদকের জন্যই। আমি ভাগ্যবান যে, অলিম্পিকের আরেকটি ফাইনালে অংশ নিতে পেরেছি। কিন্তু তার চেয়ে বড় কথা হল, আমার হিরোর সঙ্গে সাঁতরিয়েছি। আমার স্বপ্ন দেখা সার্থক হয়েছে।’