গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে দেশের দুই পুঁজিবাজার ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি করে সরকার। কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদকে চেয়ারম্যান করে ২৫ জানুয়ারি চার সদস্যের কমিটি করা হয়। কমিটিকে সময় দেওয়া হয় দুই মাস। বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী মুহিতকে তদন্ত প্রতিবেদন দেয় কমিটি। সেদিন অর্থমন্ত্রী মুহিত জানান, পুজিবাজারের অস্থিরতার পেছনে কয়েকজন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছে এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটি। তবে এসব নাম এই মুহূর্তে প্রকাশ করা হবে না।

অর্থমন্ত্রীর এই বক্তব্যে হতবাক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এ বিষয়ে ক্ষোভ করেছেন সরকারের শরিক দলের এ নেতা। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত কোন ‘প্রভাবশালী’কে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। তাহলে সরকারই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিবৃতিতে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শেয়ার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে কিছু ‘প্রভাবশালী’ ব্যক্তি রয়েছেন বলে অর্থমন্ত্রী তাদের নাম প্রকাশ করবেন না বলে যে বক্তব্য রেখেছেন তা অত্যন্ত দুঃখজনক। অর্থমন্ত্রীর এই বক্তব্যে আমি হতবাক হয়েছি। তিনি বলেন, যারা জনগণের অর্থ লুট করেছে, যারা শেয়ার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থেকে লাখ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর সর্বনাশ করে তাদের পথের ভিক্ষুকে পরিণত করেছে- তাদের নাম সরকারিভাবে প্রকাশ করা হবে না কেন তা আমার কাছে বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, শেয়ার কেলেঙ্কারির হোতাদের নাম প্রকাশ এবং তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে সরকারের বিরুদ্ধেই জনমনে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হবে। এরশাদ বিবৃতিতে বলেন, শেয়ার কেলেঙ্কারির সঙ্গে যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত অবিলম্বে তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির বিধান করতে হবে। প্রয়োজনে তাদের ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করে এবং অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে শেয়ারবাজারে মূলধন হারানো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

ওয়াকার্স পার্টির প্রধান রাশেদ খান মেনন জড়িতদের নাম প্রকাশের দাবি জানিয়ে বলেন, এর অন্যথা হলে ধরে নিতে হবে সরকার কাউকে কাউকে এ থেকে আড়াল করতে চাইছে। তিনি জড়িত ‘প্রভাবশালীদের’ বিচারের আওতায় আনার দাবিও জানান। চট্টগ্রামে একটি কমিউিনিটি সেন্টারে ওর্য়াকার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলা সাংগঠনিক সম্মেলনে এ কথা বলেন মেনন। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ‘শেয়ার কেলেঙ্কারিতে’ জড়িতদের আইনের আওতায় এনে অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি।