রোববার দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যালয়ে  কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান গোলাম রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারীর গাড়ি চালকের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয় সাক্ষ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে একটি আইন আছে; সেটা হচ্ছে সাক্ষ্য আইন ১৮৭২। এ আইনের আওতায় আদালতে সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ করা হয়ে থাকে।

গত ৯ এপ্রিল রাতে তৎকালিন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিতের ব্যক্তিগত সহকারী ওমর ফারুকের গাড়িতে বিপুল অর্থ পাওয়ার খবর প্রকাশের পর তা নিয়ে দেশজুড়ে শোরগোল শুরু হয়। এরপর ১৬ এপ্রিল ‘অর্থ কেলেঙ্কারির’ দায় নিজের কাঁধে নিয়ে রেলমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান সুরঞ্জিত।

ঘটনার পর থেকে ফারুকের গাড়ি চালক আজম খানের কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। দুর্নীতি দমন কমিশন ও রেল কর্তৃপক্ষ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে তলব করলেও তিনি হাজির হননি।

প্রায় ছয় মাস ‘নিখোঁজ’ থাকার পর বৃহস্পতিবার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভির একটি প্রতিবেদনে হাজির হন আজম। প্রতিবেদনে আজম দাবি করেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সাবেক এপিএস ওমর ফারুক পিলখানায় যে অর্থসহ আটক হয়েছিলেন তার উৎস ছিল রেলের ‘নিয়োগ বাণিজ্য’। ওই টাকা সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছানোর সময়ই ফারুক ‘আটক হন’।

গোলাম রহমান বলেন, “টেলিভিশনে প্রচারিত ওই ব্যক্তির বক্তব্য সাক্ষ্য আইনের আওতায় পড়ে না।”

এরই মধ্যে দুদকের তদন্তে রেলের পূর্বাঞ্চল প্রধান ইউসুফ আলি মৃধা ও ওমর ফারুকের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে দুদক। তবে এতে সুরঞ্জিতের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।

গাড়ি চালক আজমের অভিযোগের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও শনিবার নিজ নির্বাচনী এলাকায় এক জনসভায় সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত দাবি করেন, এ ধরনের অপপ্রচার তার বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি নিষ্পাপ, নিষ্কলঙ্ক।

টেলিভিশনে প্রচারিত আজমের বক্তব্য দুদকের তদন্তের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে গোলাম রহমান বলেন, “আমরা কখনো বলিনি তিনি (সুরঞ্জিত) নির্দোষ। আমরা বলেছি এ বিষয়ে তার প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।”

“মিডিয়াতে অনেক খবরই আসে, সবই কি আদালতে গ্রহনযোগ্য? মুখের কথায় যদি সব হতো তাহলে ড্রাইভার, চাপরাশির কথায় দেশের সব চলত।”

তবে তদন্তে প্রয়োজন হলে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে অবশ্যই ডাকা হবে বলে জানান দুদক চেয়ারম্যান।