বাংলাদেশ থেকে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ রফতানি বন্ধ হওয়ায় ভারতের ‘পশ্চিমবঙ্গ ফিস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন’ বাংলাদেশে রুই, কাতলসহ অন্যান্য মাছ রফতানি বন্ধের হুমকি দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্তে চিংড়ি বাদে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ বিদেশে রফতানি বন্ধের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এ ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ‘ফিস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অতুল দাস বাংলানিউজকে জানান, বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ রফতানি বন্ধ অব্যাহত থাকলে ভারত থেকেও বাংলাদেশে রুই, কাতলসহ অন্যান্য মাছ রফতানি যে কোনো সময় বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।
বাংলাদেশের বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার সুপার ইমতিয়াজ আহম্মেদ বাংলানিউজকে জানান, বাংলাদেশে পবিত্র রমজান মাসে মাছের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকার পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিদেশে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ রফতানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। সরকারের ঘোষণানুযায়ী, শুধুমাত্র চিংড়িমাছ বিদেশে রফতানি করা যাবে।
সরকারের এ আদেশ পাওয়ার পর বুধবার সকাল থেকেই বেনাপোল বন্দর দিয়ে ইলিশসহ সব সাদা মাছ রফতানি বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে সর্বশেষ মঙ্গলবার বিকেলে ৪৮ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রফতানি হয়েছে বলে জানান ইমতিয়াজ আহম্মেদ।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বাংলানিউজকে জানান, বেনাপোলসহ আশেপাশের বাজারে ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৩শ টাকায়। আধাকেজির নিচে হলে ৬শ থেকে ৮শ টাকা, যা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।
সরকারি সিদ্ধান্তে বিদেশে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ রফতানি বন্ধ হওয়ায় বাংলাদেশের বাজারগুলোতে মাছের দাম কমবে বলে আশা করছেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গ ফিস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অতুল দাস বাংলানিউজকে আরও জানান, বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দীঘা, কোলাঘাট ও রুপনারায়ণে ইলিশ মাছের দেখা মিলছে না। বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মাছ রফতানি করেই তাদের চাহিদা মেটানোর চেষ্টা হচ্ছিল। বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় এর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের বাজারে বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এছাড়া ভারতের দিল্লি, পাঞ্জাব ও হরিয়ানাতে বাংলাদেশি গজার মাছের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। পাঙ্গাশ ও অন্যান্য সাদা মাছের চাহিদা রয়েছে কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন হাট-বাজারে। ভারত পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় দেড়শ থেকে ২শ মেট্রিক টন রুই ও কাতল মাছ বাংলাদেশে রফতানি করে থাকে।