রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে রমনা ভবনের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে হকারদের সংঘর্ষ হয়েছে।
শুক্রবার বিকেল পৌনে তিনটার দিকে আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় ইটের আঘাতে পল্টন থানার এএসআই মোতালিব গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসকদের পরামর্শে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া আহত হয়েছেন ইলিয়াস মোল্লা নামের এক পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ৭ জন। তাদেরও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত রমনা ভবন ব্যবসায়ী ও মালিক সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকে দুপুর ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে মার্কেট থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন মতিঝিল জোনের এডিসি মেহেদি হাসান।
জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার পর পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত হয়।
সংঘর্ষের পর ওই মার্কেট ঘিরে রাখে আওয়ামী লীগ সমর্থিত হকাররা। সংঘর্ষ এড়াতে ওই এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সর্বশেষ ঘটনাস্থলে র্যাবের সদস্যরাও উপস্থিত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রমনা ভবন মার্কেটের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম সরকারের গাড়ি মার্কেটে ঢোকানোকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। জাহাঙ্গীর আলম এক হকারকে চড়-থাপ্পড় মারেন। এ নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে মার্কেটের কর্মচারী-ব্যবসায়ীদের নিয়ে তিনি ফুটপাতে হামলা চালিয়ে হকারদের উঠিয়ে দেন।
এ সময় সংঘর্ষে ইটের আঘাতে আহত হন পল্টন থানার এএসআই মোতালিব, যুগলীগ কর্মী কবির, মনির হোসেন, ছাত্রলীগ কর্মী কাওসার হাকিম, রাসেলসহ বেশ কয়েক জন। আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি জোবায়দুল হক রাসেল জানান, একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রমনা ভবন মার্কেট ব্যবসায়ীদের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম সরকার এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। তার নেতৃত্বে মার্কেটের কর্মচারী ও ব্যবসায়ীরা ফুটপাতের হকারদের নির্দয়ভাবে পিটিয়ে তাদের দোকানের পাঞ্জাবিসহ অন্যান্য কয়েক লাখ টাকার কাপড় লুটপাট করেছে। ঈদের আগে এটি অত্যন্ত নির্দয় একটি ঘটনা ঘটিয়েছেন জাহাঙ্গীর।
তিনি আরো জানান, সবচেয়ে বড় কথা হলো, তিনি (জাহাঙ্গীর) আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ নির্বাচন করেও আজকে আওয়ামী লীগ অফিসে ইটপাটকেল ছুঁড়েছেন। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।
হকার নুরু মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমাদের প্রায় একশ’ দোকানের মালামাল লুট কইরা লইয়া গেছে। কমপক্ষে ১৫ লাখ ট্যাহার মাল ছিল।
পুলিশের মতিঝিল জোনের এডিসি মেহেদি হাসান বাংলানিউজকে বলেন, গাড়ি পার্কিং এবং হকার উচ্ছেদ নিয়ে মালিক পক্ষের সঙ্গে হকারদের কথা কাটাকাটি থেকে ঘটনার সূত্রপাত। পরিস্থিতি সামাল দিতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।