প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশের মাটি থেকে আওয়ামী লীগের নাম চিরতরে মুছে ফেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস এবং বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করার জন্যই জেল খানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছিল।
তিনি বলেন, কারাগারের জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ড ছিল জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার ধারাবাহিকতারই অংশ। প্রধানমন্ত্রী জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে আজ এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে বাস্তব রূপ দিতে এবং বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে ুধা, দারিদ্র্য ও অশিামুক্ত একটি উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ধারাকে সমুন্নত রাখতে হবে বলে বাণীতে তিনি উল্লেখ করেন।
মানবতা ও গণতন্ত্রের ইতিহাসে জেলা হত্যা দিবস একটি কলঙ্কিত দিন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের এই দিনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। কারাগারে নিরাপদ আশ্রয়ে এ ধরনের বর্বর হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন।
তিনি বলেন, ৭৫-এর সেই ষড়যন্ত্রকারী ও হত্যাকারীদের প্রত্যত্শ ও পরোক্ষ মদদদাতারা পরবর্তীকালে ২১ বছর দেশের মতা কুক্ষিগত করে রেখেছিল। কখনও সামরিক লেবাসে, কখনও বা গণতন্ত্রের মুখোশ পরে, অবৈধ ও অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে থেকে শাসকগোষ্ঠী আত্মস্বীকৃত খুনিদের রক্ষা করতে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে হত্যাকারীদের বিচারের বদলে পুরস্কৃত করেছে, রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার কাজ শুরু করে। ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকর করা হয়েছে। জেল হত্যা মামলা সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হয়েছে।
দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চক্রান্তকারী এবং গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি হাত পা গুটিয়ে বসে নেই। তারা এদেশে গণতান্ত্রিক ও স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে বারবার হামলা চালিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতা-কর্মী এ হমলায় নিহত হয়। এদেশে যাতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হয়, উন্নয়ন যেন বাধাগ্রস্ত হয় সেজন্য প্রতিক্রিয়াশীল চক্র সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আমাদেও সবাইকে সজাগ থেকে সকল ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে হবে।
বাণীতে জাতীয় চার নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানন এবং নেতাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন তিনি।