ঢাকা ভাগের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে নগর ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। রোববার বেলা ১১ টার দিকে নগর ভবনের সামনে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে ২৫ জন আহত হয়েছেন। ঘণ্টাব্যাপি সংঘর্ষে গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এ সময় নগর ভবনের সামনে রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনকে (ডিসিসি) দ্বি-খন্ডিত করার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সকাল থেকে পূর্বনির্ধারিত কর্মবিরতি কর্মসূচি পালনের জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারিরা ডিসিসির ১০ জোন থেকে নগর ভবনে জড়ো হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা ভবনের সামনে বেশ কয়েকটি ময়লার গাড়ী রেখে প্রতীকি কর্মসূচি শুরু করে। এ সময় শান্তিপূর্ণভাবেই চলছিলো তাদের কার্যক্রম। বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ করে নগর ভবনের সামনের সড়কে এক কর্মচারীকে পুলিশ পিটিয়ে আহত করে। এ সময় তাকে উদ্ধার করে ভবনের ভেতর নিয়ে যায় অন্য কর্মচারিরা। ওই কর্মচারি জানায়, পুলিশ তাকে পিটিয়ে ও ইট ছুঁড়ে আহত করেছে। এতে সেখানে জড়ো হওয়া কমকর্তা-কর্মচারীরা উত্তেজিত হয়ে রাস্তায় নেমে আসে। উত্তেজিত কর্মচারিরা এ সময় পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশ প্রথমে পিছু হটে যায়। কিছুক্ষণ পরে পুলিশ সংগঠিত হয়ে প্রতিরোধ করতে গেলে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। এ ব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পুলিশ কাউকে আহত করেনি। ভেতর বা বাইরের শত্রুভাবাপন্ন কেউ এটা করে থাকতে পারে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে কর্মচারীরা নগর ভবনের সিঁড়িতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পরিষদের আহবায়ক হুমায়ন কবির। তিনি বলেন, সাড়ে ১১টায় আমাদের মিছিল নিয়ে কর্মচারীরা যখন নগর ভবনে ঢুকছিল, তখন আমাদের এক কর্মচারীকে পুলিশ ধাক্কা দেয়। তারপর কর্মচারীদের সঙ্গে তাদের ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। তারপর বহিরাগত কিছু হেলমেট পরা যুবক এসে কর্মচারীদের পিটিয়ে আহত করে। এরপর আমরা নগর ভবনে ঢুকে গেইট বন্ধ করে দেই। তিনি পুলিশি হামলার নিন্দা জানান ও ডিসিসি ভাগ করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে আগামীতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন। বিক্ষোভ সমাবেশে ঢাকা সিটি করপোরেশনের সর্বস্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সেক্রেটারি আবদুল লতিফ বলেন, পুলিশের হামলায় আমাদের ২০ জন আহত হয়েছে। তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আমরা পুলিশ বাহিনীর বিচার দাবি করছি।

নিরাপত্তার জন্য গুলিস্তান থেকে ফুলবাড়িয়া রোডে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল পুলিশ। বেলা ১২টার সময় এ রাস্তা খুলে দেয়া হয়। নগর ভবনের সামনে গেইটে বিপুল সংখ্যাক র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।