বিশ্বব্যাংকের চাপের মুখে যমুনা বঙ্গবন্ধু সেতুতে সব ধরনের যানবাহনের টোল বাড়ানো হয়েছে। এ বৃদ্ধির হার শতকরা ১৫ থেকে ২৫ ভাগ। এ সিদ্ধান্ত গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হয়।
সেতুর পূর্বপাড় টোল প্লাজার ম্যানেজার অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেওয়ান তারিক বিন রশিদ জানান, রাত ১২টার পর থেকে নতুন হারে টোল আদায় করা হবে।
সেতু বিভাগ জানিয়েছে, মোটরসাইকেলে ৫০ টাকা, প্রাইভেট গাড়ি ৫০০ টাকা, মিনিবাস ৬৫০ টাকা, বড় বাস ৯০০ টাকা, মিডিয়াম ট্রাক এক হাজার টাকা ও বড় বাসে ১৪০০ টাকা করে টোল ধার্য করা হয়েছে।

টোল বাড়ানোর জন্য বিশ্বব্যাংক গত জানুয়ারিতেই প্রস্তাব দিয়েছিল। যমুনা বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল বাড়ানোর বিষয়টি তারা পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের সাথে সম্পর্কযুক্ত করেছিলো। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের এ প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছিলেন। কারণ এতে এ সেতু দিয়ে উত্তরাঞ্চলে চলাচলকারী মানুষের বাসভাড়া বাড়বে। সবজিসহ সব পণ্যের দাম বেড়ে যাবে।
জনজীবনে দুর্ভোগ বিবেচনায় টোল বাড়াতে সরকার সময়ও নিয়েছিলো। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের ক্রমাগত চাপের মুখে এখন তা কার্যকর করা হচ্ছে।
সেতু বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে ভাড়া বাড়ানোর কারণ হিসেবে বলা হয়, যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতুর বর্তমান টোল হার ১৯৯৮ সালের জুন মাস থেকে চালু হয়। দীর্ঘ ১৩ বছরের এ সেতুর টোল বৃদ্ধি করা হয়নি।
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এ সেতু নির্মাণে গৃহীত বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বর্তমানে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। তাছাড়া সেতুর রক্ষণাবেক্ষণেও প্রচুর অর্থ ব্যয় হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরবেলা টোল হার বৃদ্ধির খবর জানাজানি হলে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চালকদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। যানবাহন চালকরা অতিরিক্ত টোল দিতে রাজি না হওয়ায় বঙ্গবন্ধু সেতুর উভয় প্রান্তে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। সকাল ৯টার দিকে সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।
সেতুর পশ্চিম প্রান্তে দাড়িয়ে থাকা উত্তরবঙ্গ থেকে আসা ট্রাকের চালক আব্দুল জলিল, রহমত আলী জানান, টোল হার বৃদ্ধির সংবাদ কর্তৃপক্ষ ব্যাপকভাবে প্রচার না করায় তারা বিষয়টি জানতে পারেনি। টোল হার কমানোর জন্য যখন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করা হচ্ছিলো সে সময় আকস্মিকভাবে টোলহার বৃদ্ধি করা দুঃখজনক।