বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আলোচনার জন্য ডেকেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। আজ বুধবার বিকেল চারটায় মন্ত্রণালয়ে এ বৈঠক হবে।
শিক্ষা সচিব কামাল আবদুল নাসের বৈঠকের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ১০-১৫ জনের একটি প্রতিনিধিদল বিকেলে মন্ত্রণালয়ে যাবে।
গত সোমবার মধ্যরাতে শিক্ষক সমিতির নেতারা শিক্ষামন্ত্রীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে গিয়ে বৈঠক করেন। এ সময় সহ-উপাচার্য হাবিবুর রহমানকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। উপাচার্যের বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানানো হয়। গতকাল মঙ্গলবার সকালে শিক্ষকেরা এ সিদ্ধান্ত জানালে শিক্ষার্থীরা তা মানতে রাজি হননি। বেলা সাড়ে তিনটায় বুয়েট মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে শিক্ষার্থীদেরও নিজস্ব ভাবনা রয়েছে। আছে নিজেদের যুক্তিসংগত ভাবনাগুলো তুলে ধরার চেতনা। তাই অভিভাবক হিসেবে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে তাঁদের কথাগুলো তাঁরা তুলে ধরতে চান। শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষকরা মন্ত্রীর বক্তব্যে আশ্বস্ত হলেও আমরা হতে পারছি না।
তবে গতকাল পর্যন্ত উপ-উপাচার্য তার পদত্যাগপত্র জমা দেননি। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলনের পর সোমবার মধ্যরাতে বুয়েট শিক্ষক সমিতির একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। বৈঠকে উপ-উপাচার্যকে অপসারণ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার ও অন্যান্য অভিযোগের বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এতে আশ্বস্ত হয়ে প্রতিনিধি দল ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আশা প্রকাশ করেন। এরপর গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বুয়েট শিক্ষকরা। সেখানে সার্বিক পরিস্থিতি ও মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরে শিক্ষকরা ক্লাসে ফেরার পক্ষে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন।
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক শেষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র সুদীপ্ত সাহা সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষকরা মন্ত্রীর বক্তব্যে আশ্বস্ত হলেও আমরা হতে পারিনি। আমরা উপাচার্যেরও অপসারণ চাই। এরপর বিস্তারিত জানাতে বিকেল সাড়ে ৩টায় বুয়েট মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মিলনায়তনভর্তি শিক্ষার্থীরা একযোগে বলেন, বর্তমান উপাচার্য স্বপদে বহাল থাকা অবস্থায় তারা ক্লাসে ফিরবেন না। লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের পক্ষে মেরিনা জাহান (কেমিকৌশল বিভাগ, ০৭ ব্যাচ) বলেন, আমাদের এক দফা এক দাবি, ভিসি ও প্রো-ভিসির অপসারণ। আমাদের যারা চুরির দায়ে মিথ্যা মামলা দেয়, আমাদের তাজা রক্ত দেখেও যাদের হূদয়ে বিন্দুমাত্র কম্পনের সৃষ্টি হয় না তাদের একজনেরও এ প্রাঙ্গণে (বুয়েট ক্যাম্পাস) অবস্থান আমাদের জন্য নিরাপদ নয় বলে আমরা বিশ্বাস করি। শিক্ষামন্ত্রীকে বুয়েট ক্যাম্পাসে আসার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের প্রাঙ্গণে এসে আমাদের কথাগুলো শুনবেন এবং আবেগ ও বাস্তবতা অনুধাবন করে সিদ্ধান্ত নেবেন।