মন্ত্রিসভায় আর থাকতে চান না তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। তিনি সোমবার একটি দৈনিকের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এ ইঙ্গিত দিয়েছেন। অন্যদিকে মন্ত্রিসভার সোমবারের নিয়মিত বৈঠকেও যোগ দেননি সৈয়দ আবুল হোসেন। সাবেক এই যোগাযোগমন্ত্রীর পদত্যাগের গুঞ্জনের মধ্যেই তার এ অনুপস্থিতির ঘটনা ঘটলো।

গত দু’দিন ধরেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, আবুল হোসেন মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করছেন।

পদত্যাগ করেছেন কি না, একটি দৈনিকের সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আবুল হোসেন বলেছেন, ‘‘পদ্মা সেতু বিষয়ে তদন্ত চলছে। এ অবস্থায় আমি সরকারি দায়িত্ব পালন করতে চাই না। আমার শুভাকাঙ্ক্ষী এবং আমি যাদের শ্রদ্ধা করি তারা বিভিন্ন সময় আমাকে বলেছেন, তদন্ত চলাকালে আমার মন্ত্রী পদে থাকা উচিত না। আমি সিদ্ধান্তটা নিয়েছি। কার্যকর ব্যবস্থাও নিয়ে ফেলেছি। আমি দায়িত্বে থাকবো না।’’

মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিঙে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইয়া বৈঠকে সৈয়দ আবুল হোসেনের অনুপস্থিতির কথা স্বীকার করেন।

তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে আমি লক্ষ্য করিনি। পরে দেখলাম, তিনি বৈঠকে নেই।’’

সৈয়দ আবুল হোসেনের দাবি, ‘‘তদন্তে প্রমাণিত হবে, আমি নির্দোষ। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। দুদক, কানাডার পুলিশ ও বিশ্বব্যাংক- যে যতোই তদন্ত করুক না কেন, আমাদের দুর্নীতিতে জড়াতে পারবে না। আমি অন্যায়কে প্রশ্রয় দিইনি। স্বচ্ছতা, আন্তরিকতা ও দ্রুততার সঙ্গে পদ্মাসেতুর কাজ করেছি।’’
তদন্তের স্বার্থে দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নের কোনো সরাসরি জবাব দেননি সৈয়দ আবুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি জাতির উদ্দেশ্যে একটি চিঠি লিখেছিলাম। সেখানে ইঙ্গিত দেওয়া আছে। সেটি প্রধানমন্ত্রী, বিশ্বব্যাংক ও জাতি- সবাই দেখেছে।’’

তাহলে দফতরবিহীন মন্ত্রী থাকছেন, নাকি মন্ত্রিসভা থেকে সরে যাচ্ছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে আবুল হোসেন বলেন, ‘‘আমি মন্ত্রী থাকবো কি না, সবকিছুই আল্লাহর ইচ্ছে। আর দফতরবিহীন মন্ত্রী হওয়ার বিষয়ে আল্লাহ প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা দিয়েছেন। তিনিই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’’

তবে এখনো পদত্যাগপত্র পাননি বলে উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইয়া বলেন, ‘‘তিনি পদত্যাগ করেছেন কি না, তা আমি জানি না।’’          

রোববার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত পদ্মা সেতুর ঋণ পেতে শেষ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংকের চারটি প্রস্তাবই মেনে নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে শেষ পর্যন্ত বিতর্কিত এই মন্ত্রী পদত্যাগ করতে পারেন।

সম্প্রতি আবুল হোসেন বিভিন্ন দৈনিকে বিজ্ঞাপন হিসেবে বিশাল খোলা চিঠি প্রকাশ করেন। খোলা চিঠিতেও আবুল হোসেন তার সরে পড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, শিগগির তিনি পদত্যাগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারেন।
 
উল্লেখ্য, পদ্মাসেতু নিয়ে যে সময় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে, সে সময় সৈয়দ আবুল হোসেন যোগাযোগমন্ত্রী ছিলেন। পরে তাকে সরিয়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়।