শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠকে প্রারম্ভিক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,  ওয়ান-ইলেভেনের মতো আবারো অনির্বাচিতদের ক্ষমতায় আনার ‘ষড়যন্ত্র’ শুরু হয়েছে।সেই সাথে তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, কিছু কিছু শ্রেণী আছে, যাদের ক্ষমতায় যাওয়ার খায়েশ আছে; কিন্তু জনগণের সামনে দাঁড়ানোর সাহস নেই। তাদের খায়েশ পূরণ করতেই আজ এই অবস্থা। যারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে এ প্লাস সার্টিফিকেট দিয়েছেন। অনির্দিষ্টকালের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকতে পারে বলে ফতোয়া দিয়েছিলেন, যে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী, তারাই আবার খেলা শুরু করেছে।তারাই অসাংবিধানিক ধারায় ক্ষমতায় যেতে চায়।

শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে জাতীয় সংসদের উপ-নির্বাচন থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার পর্যায়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি নির্বাচনের সবই সুষ্ঠু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করেছে।মানুষ পছন্দমতো তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। জনগণের ওপর এই বিশ্বাস আওয়ামী লীগ রাখতে পারে।

তিনি বলেন,  ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) প্রতিবছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে তাদের প্রতিবেদন দিলেও ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছাড়ার আগে জুন মাসে সম্পূর্ণ  বানোয়াট প্রতিবেদন দিয়েছিল।

শেখ হাসিনা দাবি করেন, বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ অন্য দেশের কাছে বিক্রি করতে রাজি হয়নি বলেই আওয়ামী লীগ তখন ক্ষমতায় বসতে পারেনি। আমাদের দেশের সম্পদ, সেই তেল বেচবে এক দেশ, আর কিনতে আরেক দেশ। আমি রাজি হইনি। আমরা ভোট পেয়েও ক্ষমতায় যেতে পারলাম না।

বর্তমান সরকারের আমলে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন,  মানুষ কতটা উন্নতি করেছে, তা তারা দেখে না। দেখবে কীভাবে? চোখে তো ঠুলি পরা।বর্তমান সরকারের আমলেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ হবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বক্তব্যের শুরুতেই জাতীয় কমিটির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, কাউন্সিলের পরই গুরুত্বপূর্ণ এই জাতীয় কমিটি।

প্রত্যেকটি সাংগঠনিক জেলা থেকে একজন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এবং দলীয় প্রধান মনোনীত ২১ জনকে নিয়ে জাতীয় কমিটি গঠিত হয়েছে।

উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমদ ও আব্দুল জলিলকে জাতীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সভায় শেখ হাসিনার সঙ্গে মঞ্চে তারা তিনজনই ছিলেন। এছাড়াও ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, মতিয়া চৌধুরী, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও সাহারা খাতুন, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মণি।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলনের পর শনিবারই জাতীয় কমিটির প্রথম বৈঠক হল।

তবে এখন থেকে এই কমিটির বৈঠক নিয়মিত হবে বলে জানান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।