রোগী ও বহির্বিভাগের রোগীদের অযত্নে ফেলে রেখে নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে দিনভর কর্মবিরতি পালনের মতো নজিরবিহীন এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্সসহ সর্বস্তরের কর্মচারীরা।
সরকারি হাসপাতালে প্রায় সবক’টি সেবা বন্ধ করে কর্মবিরতি পালনের নজির স্বাস্থ্য খাতে এর আগে দেখা যায়নি। সকাল ১১টায় ‘সর্বস্তরের চিকিৎসক, কর্মকর্তা, সেবক-সেবিকা ও কর্মচারীবৃন্দের ব্যানারে সবাই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে মেতে ওঠেন। এ সময় এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রামসহ অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার কক্ষ তালাবদ্ধ ছিল।সেখানে কেবল মুমূর্ষু রোগীদেরই চিকিৎসা চলছে। হাসপাতালের রোগী নিবন্ধন বইয়ের তথ্য মতে, গতকাল হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৭৬৯ জন রোগী।
কর্মবিরতির কারণ, শুক্রবার রাতে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সামনে কর্মচারী জাহাঙ্গীরের সঙ্গে কয়েকজনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে উপ-পরিচালক ডা. আবুল হাসেম তাদের পরিচয় জানতে চান। ওই সময় জাহাঙ্গীরের সঙ্গে ৬৬নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন ছিলেন। উপ-পরিচালক তাকে না চেনায় সে ক্ষুব্ধ হয়। পরদিন শনিবার দুপুর দেড়টায় নাসিরের নেতৃত্বে কয়েকজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী উপ-পরিচালকের কক্ষে ঢুকে তাকে মারধর করে এবং মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার রাতেই পুলিশ নাসিরকে গ্রেফতার করে। একই দিন হাসপাতাল পরিচালক কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। গতকাল সকাল ১০টার দিকে চিকিৎসক-নার্সসহ সবাই নিজেদের নিরাপত্তাসহ ৮ দফা দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন। এতে হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে যায়।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম ফরিদুজ্জামান সমকালকে বলেন, কর্মসূচির কারণে হঠাৎ একটু অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল। এখন তা কেটে যাবে। হাসপাতালে নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।