পদ্মা সেতু নির্মাণে নিজস্ব অর্থায়নের উৎস হিসেবে মুঠোফোনের প্রতি কলে ২৫ পয়সা করে সারচার্জ আরোপের প্রস্তাব করেছেন স্পিকার আবদুল হামিদ।
জাতীয় সংসসের ১৩তম অধিবেশনের শেষ দিনে স্পিকার আবদুল হামিদ এ কথা বলেন। তাঁর সভাপতিত্বে আজ রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে অধিবেশন শুরু হয়।
অধিবেশনের শুরুতেই স্পিকার বলেন, প্রধান বিরোধী দল বিএনপি সংসদ অধিবেশনে থাকলে তাদের দেওয়া কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মুলতবি প্রস্তাব নিয়ে সংসদে আলোচনা করার সুযোগ ছিল। কিন্তু তারা না আসায় এ নিয়ে আলোচনা হলো না।
আবদুল হামিদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার কথা বলেছেন। নিজস্ব অর্থায়নের ব্যাপারে স্পিকার তাঁর প্রস্তাব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মোবাইল ফোনের প্রতি কলে যদি ২৫ পয়সা করে নেওয়া যায়, তাহলে বড় অঙ্কের অর্থ সংগ্রহ করা যাবে।
স্পিকার বলেন, এর আগে মুঠোফোনের কথার ওপর কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটা সাধারণ মানুষ ব্যবহার করে। তাই তাদের ওপর অতিরিক্ত অর্থারোপ প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে অর্থমন্ত্রী প্রত্যাহার করেছেন।
স্পিকার বলেন, তিনি আলাদা কোনো ব্যক্তি নন। এক সাধারণ মানুষ, একজন সাধারণ সংসদ সদস্য। সাংসদেরা কেবল তাঁকে একটি দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে হলে মোবাইলের প্রতি কলে ২৫ পয়সা সারচার্জ নির্ধারণ করা হলে তা খুব বেশি হবে না। সাংসদদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা নিজ নিজ এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। তাদের বোঝান। তাহলে পদ্মা সেতুর মতো বা আরও বড় বড় প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে করা যাবে।
‘বিএনপি না থাকায় মুলতবি প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হলো না’: স্পিকার বলেন, বিএনপির সাংসদেরা এই অধিবেশনে অনেকগুলো মুলতবি প্রস্তাব দিয়েছেন। যদিও বাজেট আলোচনার সময় মুলতবি প্রস্তাব দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে বাজেট পাসের পর এসব মুলতবি প্রস্তাবের মধ্য থেকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হতে পারত। বিরোধী দল না থাকায় এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না।
পরে সমাপনী ভাষণে স্পিকার বলেন, সংসদ প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে বিতর্কের মাধ্যমে। সংসদীয় বিতর্কে বিরোধী দলই মুখ্য ভূমিকা পালন করে। কিন্তু দুঃখজনক হলো, এবারের বাজেট অধিবেশনে বিরোধী দল যোগ দেয়নি। বিরোধী দল বাজেট আলোচনায় অংশ নিলে দেশবাসী উপকৃত হতো। তারা না আসায় ইতিবাচক ও নেতিবাচক বিভিন্ন মতামত ও প্রস্তাব থেকে জাতি বঞ্চিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করব, শিগগিরই বিরোধী দল সংসদে যোগ দিয়ে জনগণের দেওয়া দায়িত্ব পালন করবে।’
স্পিকার বলেন, অধিবেশনে মোট কার্যদিবস ২৯টি। এই অধিবেশনে এক লাখ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকার বাজেট পাস হয়েছে। বাজেট বক্তৃতায় ২১৩ জন সংসদ সদস্য অংশ নেন। বাজেটের ওপর আলোচনা হয়েছে ৪৬ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। অধিবেশনে ৩১টি সরকারি বিলের মধ্যে ১৫টি পাস হয়েছে। ৭১ বিধিতে পাওয়া ৫৩৭টি নোটিশের মধ্যে ২৭টি গৃহীত হয়। আলোচনা হয়েছে ২১টি। প্রধানমন্ত্রী মোট ৬৮টি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। মন্ত্রীরা দুই হাজার ১৪৮টি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। এ ছাড়া কয়েকজন মন্ত্রী সমসাময়িক বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।