বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। ২০০১ সালের পর বিএনপি জামায়াত জোট সরকার যে অত্যাচার নির্যাতন করেছিল তার জবাব দিতে গেলে আজ তাদের অস্তিত্ব থাকতো না।তারা ক্ষমতায় থাকতে অত্যাচার, নির্যাতন ও লুটপাটে ব্যস্ত ছিলো। তাই দেশের উন্নয়ন করতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রী মিডিয়া ও টক শো’র সমালোচনা করে বলেন, মিডিয়ার মালিকরা অনেক টাকার মালিক।তারা ব্যবসায়ী। তাদের অনেক চাহিদা আমরা সবসময় পূরণ করতে পারি না। তখন তারা আমাদের ওপর বেজার হন। আমাদের ওপর রাগ করে অনেক কথা লেখেন।“
মধ্যরাতে টক শো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মধ্যরাতে টক শো’র নামে কী হয়। আগে মধ্যরাতে যারা জাগতো তারা সিঁধ কাটার জন্যই জাগতো। এখন যারা মধ্যরাতে জাগে তারা আমাদের গলা কাটতে চায়। টক শো-তে নানা কথা বলে তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করছেন।
এসময় আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতাসহ রাজবাড়ির তৃণমূল নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
রামু, উখিয়া,পটিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে বৌদ্ধ প্যাগোডায় হামলার ঘটনার পরদিনই ঘটনার জন্য সরকার ও আওয়ামী লীগকে দায়ী করে বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়ার বক্তব্যের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মিথ্যা কথা বলায় উনার পারদর্শিতা আছে। ঘটনার পরদিনই উনি বললেন, ওই হামলায় সরকারি দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরাই জড়িত। এখন আবার বলছেন প্রকৃত ঘটনা না জেনে কারো ওপর দোষ চাপানো উচিৎ নয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঘটনার দিন বিএনপির স্থানীয় এমপি রাত সাড়ে ১১টায় সেখানে যায়। সঙ্গে গাড়ি ও মোটরসাইকেলে করে লোকজন নিয়ে যায়। প্রতিটি হোন্ডায় তিনজন করে লোক ছিল। এরপর উনি সেখান থেকে চলে যান। বিএনপির এমপি বাড়ি গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন, আর তখনই সমস্ত প্যাগোডায় আগুন জ্বলে ওঠে। যেনো রোম যখন পুড়ছিলো নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেছে। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় এমপি কিভাবে বাড়িতে ঘুমিয়ে থাকে। পর্যব্ক্ষেণ করলেই বোঝা যায় কারা কি উদ্দেশ্যে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্তেই সব বেরিয়ে আসবে করা ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত।
তিনি বলেন, উনি (খালেদা) বলছেন প্রকৃত ঘটনা না জেনে কারো ওপর দোষ চাপানো উচিৎ নয়। এখন উনার বোধদয় হয়েছে। এই বোধদয় তখন উনার কোথায় ছিলো।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সতর্ক থেকে জনগণের জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগকে অনেকেই ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। এখনো চেষ্টায় আছে। এখনো অনেকে নানা কথা বলে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। আপনাদের জনগণের পাশে থেকে কাজ করতে হবে। মানুষ তো আমাদের ভোট দিয়েছে। কাজ তো আমাদের করতে হবে।
রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ঢাকা বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন প্রমুখ।