বুয়েটের সংকট সমাধানের জন্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দিকে সবাই তাকিয়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে আজ একটি সমাধান আসতে পারে। আন্দোলনকারী শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানিয়েছেন, এ দুই ব্যক্তির অপসারণ ছাড়া আন্দোলন থামবে না। এ দাবিতে তারা রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. জিল্লুর রহমানের কাছে রোববার স্মারকলিপি দিয়েছেন।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ রোববার বলেছেন, আলোচনা ছাড়া সরকারের হাতে আর কোনো শক্তি নেই। এর মাধ্যমে সংকট নিরসন হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষক সমিতির নেতাদের ডাকা হচ্ছে না কেন—জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আগেও কথা হয়েছে। তা ছাড়া একবার তারা সময় দিয়ে বৈঠকে আসেননি। যেহেতু তারা আসবেন না, তাই দাওয়াত করে শিক্ষকদের বিব্রত করতে চাই না।’
তবে বুয়েট পরিবারের সদস্যদের প্রায় সবাই সংকট নিরসনে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দিকে চেয়ে আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী জানান, পরিস্থিতি যে রূপ ধারণ করেছে, তাতে সাধারণ আলোচনায় সংকট নিরসন হবে না।
বুয়েট প্রশাসনের পক্ষ নিয়ে কিছু শিক্ষক, ছাত্রলীগ-সমর্থক শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশ মাঠে নামায় আন্দোলনকারীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, আন্দোলন থেকে বিরত থাকতে তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের বিরুদ্ধে ১৬টি অনিয়মের অভিযোগ তুলে কয়েক মাস ধরেই বুয়েটের শিক্ষক সমিতি আন্দোলন করছে। যদিও উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য দুজনই তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
গত ৭ এপ্রিল থেকে শিক্ষক সমিতি কর্মবিরতি শুরু করে। লাগাতার ২৮ দিন কর্মবিরতির পর ৪ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকেরা ৫ মে থেকে আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত করেন। গত ৯ জুন সমিতির সভায় ৩০ জুনের মধ্যে উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে সময় বেঁধে দেয়া হয়। এর মধ্যে তারা পদত্যাগ না করায় ৭ জুলাই থেকে প্রতীকী কর্মবিরতি চলতে থাকে। ১৪ জুলাই থেকে তারা লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
এরই মধ্যে ১০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আকস্মিকভাবে ১১ জুলাই থেকে ৪৪ দিনের জন্য বুয়েট বন্ধ ঘোষণা করে।
এরপর শিক্ষক সমিতি পদত্যাগ শব্দটি বাদ দিয়ে উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে
যাওয়ার ঘোষণা দেয়। ১১ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে তারা লাগাতার অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি
পালন করে আসছেন।