কক্সবাজারের রামু-উখিয়া-টেকনাফ-পটিয়ায় সরকারের পরোক্ষ ইন্ধনেই বৌদ্ধ বসতিতে হামলার ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছে বিএনপির তদন্ত দল।

এই ঘটনার রহস্য উদঘাটনে অতিদ্রুত একজন অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনেরও দাবি জানিয়েছে দলটি।

বিএনপি গঠিত ৮ সদস্যের এই তদন্ত কমিটির সদস্যরা গত সপ্তাহে ঘটনাস্থল ঘুরে এসে শুক্রবার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ৬৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।

তদন্ত কমিটির প্রধান মওদুদ আহমদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও সাক্ষ্য প্রমাণ থেকে নিশ্চিত হয়েছি, বৌদ্ধ বিহারে হামলার ঘটনার ২/৩ ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসনের কোনো রকম ব্যবস্থা গ্রহণ না করার ফলে এ রকম ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যা সরকারের নিরবতার বহিঃপ্রকাশ। এ থেকে বোঝা যায়, পরোক্ষভাবে সরকারের ইন্ধনেই হামলার ঘটনাগুলো সংঘটিত হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা আমাদের জানিয়েছেন, এটি একটি পূর্ব পরিকল্পিত হামলা। যদি পরিকল্পিত না হতো, প্রশাসন অতি স্বল্প সময়ে এবং অতি দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নিত।

তদন্ত দলের এই প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হয়, যাতে ৫ দফা সুপারিশ ও করণীয় তুলে ধরেছেন শীর্ষ বিএনপি নেতারা।  

তদন্ত কমিটি বলছে, ঘটনাকে পূঁজি করে বিরোধী দলের ওপর মিথ্যা অভিযোগ ও হয়রানিও বন্ধ করতে হবে। নিরীহ মানুষকে জড়িয়ে মামলা দেয়ার কৌশল থেকেও সরকারকে বিরত থাকতে হবে।

এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংসপ্রাপ্ত সব বিহার, প্যাগোডা ও মন্দির পুনর্নির্মাণ, এসব উপাসনালয়ের মূল্যবান স্থাপনা ও ঐতিহ্য পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা এবং পুড়ে যাওয়া ধর্মীয় গ্রন্থের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে এই প্রতিবেদনে।

মওদুদ বলেন, রামুতে ৭টি, উখিয়া ৪টি, টেকনাফে একটি এবং পটিয়ায় ৩টি করে মোট ১৫টি বিহার ও প্যাগোডা ধ্বংস করা হয়েছে। তিনশ বছরের পুরনো বৌদ্ধ বিহারে এমনভাবে হামলা হয়েছে, যা দেখে মনে হয় সেখানে বোমা ফেলা হয়েছে।

রামু,উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়ায় বৌদ্ধ জনগণসহ ওই অঞ্চলের সংখ্যালুঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

এই তদন্ত কমিটির অপর সদস্য আবদুল মঈন খান, আবদুল্লাহ আল নোমান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, রুহুল আলম চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, গোলাম আকবর খন্দকার, গৌতম চক্রবর্তী ও অধ্যাপক সুকোমল বড়–য়াও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।