ভারতের স্বরাষ্ট্র সচিব সীমান্তে গুলি চালানোর পক্ষে যুক্তি দেয়ার এক দিনের মাথায় ঝিনাইদহের মহেশপুরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে নিহত হয়েছেন এক বাংলাদেশি। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরো পাঁচজন।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) শ্রীনাথপুর ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার মোর্শেদ আলী জানান, বুধবার সকালে মহেশপুরের শ্রীনাথপুর সীমান্তে ভারতের মোবারকপুর মাঠে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রবিউল ইসলাম (৩৫) মহেশপুর সীমান্তবর্তী শ্যামকুড় গ্রামের বাসিন্দা।

আহতরা হলেন- শ্যামকুড় মাঠপাড়া গ্রামের রাজু, পদ্মপুকুর গ্রামের মহর আলী, লড়াইঘাটা গ্রামের ইমরান, শ্রীনাথপুর গ্রামের আব্দুল ও শঙ্কর।

বিজিবির মোর্শেদ আলী জানান, ওই ছয়জন ভারত থেকে গরু নিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তের শ্রীনাথপুরের কাছাকাছি পৌঁছালে ফতেপুর ক্যাম্পের বিএসএফ জওয়ানরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান রবিউল। তার পাঁচ সঙ্গীও গুলিবিদ্ধ হন।

রবিউলের লাশ সীমান্তের ভারতীয় অংশেই রয়েছে বলে মোর্শেদ আলী জানান।

মহেশপুর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিএসএফের গুলিতে আহত রাজু ও মহর আলীকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের হাতে নিরস্ত্র বাংলাদেশি হতাহতের ঘটনায় মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তীব্র সমালোচনার মধ্যে গত বছর ভারত সরকার জানায়, তারা বিএসএফের হাতে প্রাণঘাতী নয়- এমন অস্ত্র দেবে। এরপর গুলির ঘটনা কিছুটা কমে এলেও গত কয়েক মাসে তা আবার বেড়ে যায়।

স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের তিন দিনের সম্মেলনে যোগ দিতে বাংলাদেশে এসে ভারতের সচিব আর কে সিং গত সোমবার বলেন, “বিএসএফ সদস্যরা আক্রান্ত হয় বলেই গুলি চালায়।”

আখাউড়া স্থলবন্দর পরিদর্শনের সময় আর কে সিং সাংবাদিকদের আরো বলেন, “যাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয় তারা গরু চোরাকারবারী।”

ঢাকার মানবাধিকার সংগঠন নাগরিক আন্দোলনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক দশকে বিএসএফে হাতে এক হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন। একই সময়ে বিএসএফের গুলিতে আহত হয় হয় ৯৮৭ জন, অপহৃত হয় অন্তত এক হাজার মানুষ।