নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের ইয়াহিয়া ওরফে বর্দ্দা তার দুই সহযোগীসহ গ্রেফতার হয়েছেন।গ্রেফতার হওয়া অন্য দু’জন হচ্ছেন মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন ও ইয়ার মোহাম্মদ।বঙ্গবল্পুব্দ এভিনিউতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পলাতক আসামি তিনি ।
ইনটেলিজেন্স উইংয়ের একটি টিম বুধবার গভীর রাতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব এলাকায় বাস তল্লাশি করে তাদের গ্রেফতার করে। পরে তাদের র‌্যাব সদর দফতরে নিয়ে আসা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে র‌্যাব সদর দফতরে তাদের সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়।

ইয়াহিয়া রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলা ও কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব ইন্টেলিজেন্সের একটি টিম ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কিশোরগঞ্জের ‘দুর্জয় ভৈরব’ এলাকায় অবস্থান নেয়। বুধবার রাত আড়াইটার দিকে নাসিরাবাদ পরিবহনের একটি বাস তল্লাশি করে তাদের তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার এড়াতে তারা প্রথমে নিজেদের পরিচয় গোপন করার চেষ্টা করেন। পরে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর রাতেই তাদের ঢাকায় আনা হয়। এ সময় তাদের কাছে তাদের নিজস্ব একটি মানচিত্র ও কিছু জিহাদি বই পাওয়া যায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাওলানা ইয়াহিয়া জানান, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের আমির মাওলানা শেখ ফরিদ র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর তিনি সংগঠনটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জঙ্গি গ্রেফতার অভিযান এবং দেশের জঙ্গি সংক্রান্ত চাঞ্চল্যকর বিভিন্ন মামলা বিশেষ করে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পুনর্তদন্ত শুরু হওয়ায় তিনি গোপনে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন।
১৯৭৭ সালে সিলেট কাজী বাজার কওমি মাদ্রাসায় ৭ বছর ও পরে হাটহাজারী মাদ্রাসায় এক বছর পড়াশোনা করেন ইয়াহিয়া। ১৯৮৬-৮৭ সালে মুফতি ইজহারুল ইসলামের লালখান বাজার মাদ্রাসা, চট্টগ্রামে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে তিনি ১৯৮৭ সালে চাকরির উদ্দেশ্যে ভারত হয়ে করাচি যান। সেখানে জনৈক আবদুর রহমান ফারুকীর হাত ধরে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৮৮ সালে তার সঙ্গে আফগান মুজাহিদের পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানে যান। যুদ্ধে অংশগ্রহণ শেষে তিনি ১ মাসের অধিক সময় বিভিন্ন অস্ত্র চালনা এবং বোমা বিস্টেম্ফারণের ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে অন্য আফগান মুজাহিদদের সঙ্গে আফগানিস্তানের লিজা, জান্দাদ, অলিমকিলা ইত্যাদি এলাকায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৯২ সালে বাংলাদেশে তিনি ফেরত আসেন। এক সময় তিনি হুজির কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন।