কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদকে কোথায় দাফন করা হবে- তা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তার ছোট ভাই রম্যলেখক আহসান হাবীব।

তবে নুহাশ পল্লীতে যে তার কবর হচ্ছে না- তা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রোববার মিরপুরের পল্লবীতে নিজের বাসায় বড় ভাই জাফর ইকবাল ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর আহসান হাবীব সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। তবে নুহাশ পল্লীতে তার দাফন হচ্ছে না। ভক্ত আর শুভানুধ্যায়ীরা চাচ্ছেন, তিনি যেন সকলের মাঝে থাকতে পারেন। তাই আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।”

হুমায়ূনের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন দেশে পৌঁছালে তার সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আহসান হাবীব জানান।

নয় মাস ক্যান্সারে ভোগার পর বৃহস্পতিবার রাতে নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালে মারা যান হুমায়ূন। বাংলাদেশ সময় রোববার সকাল ৯টায় নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দর থেকে এই কথাশিল্পীর মরদেহ নিয়ে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হন স্বজনরা।

স্ত্রী শাওন, শাশুড়ি তহুরা আলী, দুই সন্তান নিষাদ ও নিনিত, শ্যালিকা সেজুতি এম আফরোজ এবং অন্য প্রকাশের স্বত্ত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলামও একই বিমানে ফিরছেন। সোমবার সকাল ৯টার দিকে তাদের ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু শনিবার জানান, সোমবার সকাল ১১টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই লেখকের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাবে সর্বস্তরের মানুষ। এরপর বেলা আড়াইটায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে বারডেমের হিমঘরে রাখা হবে মরদেহ।

এর আগে আহসান হাবীব জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবার বাদ জোহর গাজীপুরে হুমায়ূনের গড়া নুহাশ পল্লীতেই তাকে সমাহিত করা হতে পারে। তবে তাদের আরেক ভাই অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেছিলেন, দাফনের ক্ষেত্রে লেখকের ইচ্ছাকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে। এ বিষয়ে হুমায়ূন কোনো ইচ্ছার কথা বলে গেছেন কিনা, তা খুঁজে দেখা হচ্ছে।

বৃহদান্ত্রে অস্ত্রোপচারের আগে কিছুদিনের জন্য দেশে আসেন হুমায়ূন। গত ১২ মে নুহাশ পল্লীতে বসে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি চাচ্ছিলাম, আমার মৃত্যুর পর কবরটা এখনে হোক। পরে দেখলাম, এটা কবরস্থান হয়ে যাবে। এটা কবরস্থান হওয়ার স্থান নয়। এটা তখন গুলিস্থানে পরিণত হবে। এখানে দুনিয়ার লোক আসবে। ২১ শে ফেব্রুয়ারি ফুল দেওয়ার জন্য, ১৩ নভেম্বর ফুল দেওয়ার জন্য আসবে। এটা হয়ে যাবে একটা কবরস্থান। এটা কবরস্থান বানানো যাবে না।”