পৃথিবীর জনসংখ্যা এগিয়ে যাচ্ছে সাতশো কোটির দিকে৷ এ নিয়ে অনেকেই চিন্তিত৷ বিকাশমুখী অনেক দেশেই জনসংখ্যা বাড়ছে৷ কিন্তু জাপানে ঘটছে পুরোপুরি এর উল্টোটা৷ সেখানে বাচ্চা নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে আজকের প্রজন্ম৷ ১৯৫০ সালে জাপানের পরিবারে দুই থেকে তিনটি করে দেখা গেছে৷ এখন একটি বাচ্চাই যথেষ্ট মনে করা হচ্ছে৷ এবং কোন কোন ক্ষেত্রে বাচ্চার ঝামেলাতেই স্বামী-স্ত্রী যেতে চান না৷

প্রশ্ন উঠেছে যদি নতুন প্রজন্মের সংখ্যা এত কম হয় তাহলে যারা বৃদ্ধ, তাদের যত্ন কে নেবে? এইসব বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের দেখাশোনাই বা কে করবে? কীভাবে রক্ষা করা হবে তাদের প্রয়োজনগুলো? এসব প্রশ্নের মুখে এগিয়ে এসেছে বেশ কিছু কোম্পানি৷ গাড়ি তৈরির কারখানা থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান এবং ইলেকট্রনিক্সের কোম্পানি তৎপর হয়েছে৷ তারা তৈরি করছে রোবট৷ যেমন প্যানাসনিক কোম্পানি এমন একটি বিছানা তৈরি করেছে যা হুইল চেয়ার হিসেবেও ব্যবহার করা সম্ভব৷ এমন একটি রোবটও তারা তৈরি করেছে যে রোবটটি বৃদ্ধ বা বৃদ্ধার চুলে শ্যাম্পু করতে এবং চুল ধুয়ে দিতে  সাহায্য করবে৷ কোম্পানির পরিচালক, ইয়ুকিও হোন্ডা বলেন,‘‘আমাদের লক্ষ্য হল সমাজের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সাহায্য করা৷ শারীরিকভাবে যারা আর আগের মত পরিশ্রম করতে পারেন না, তাদের প্রতিদিনের জীবনকে আরো সহজ করে তোলা৷”

টয়োটা মোটর কোম্পানি তৈরি করছে এমন একটি রোবট যা সঙ্গী হবে নিঃসঙ্গ মানুষের৷ তারা ঘর পরিষ্কার করবে, প্রয়োজনীয় ওষুধটি কাছে এনে দেবে, হাঁটা-চলার সময় একটি হাত ধরে রাখবে৷ এ ধরণের সেবা দেবে রোবট৷

জাপানের মানুষরা দীর্ঘায়ু লাভ করে থাকে৷ পুরুষরা সাধারণত ৮০ বছর পর্যন্ত বাঁচে এবং মহিলারা ৮৬৷ একশো বছর বয়সের মানুষ জাপানে কম নয়৷ জাপানের বর্তমান জনসংখ্যা বারো কোটির কিছু বেশি৷ এর মধ্যে ২৩ শতাংশের বয়স ৬৫ বছরেরও বেশি৷ আশঙ্কা করা হচ্ছে ২০৫৫ সালের মধ্যে জাপানের জনসংখ্যা নেমে আসবে নয় কোটির নীচে৷

দাইওয়া ইন্সটিটিউট অফ রিসার্চের প্রধান গবেষক হিতোশি সুজুকি জানান, ‘‘পৃথিবীর অনেক দেশেই জনসংখ্যা কমে আসছে – এই কথা আমরা শুনছি৷ এদিক থেকে জাপান রয়েছে শীর্ষে৷”