ডারবান জলবায়ু সম্মেলনেই জলবায়ু বিপর্যয়ের শিকার মানুষের বিষয়গুলো আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক এক আলোচনায় শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আসন্ন ডারবান জলবায়ু সম্মেলনে এ বিষয়ে একটি সফল চুক্তির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। মেক্সিকো ও দক্ষিণ আফ্রিকার যৌথ আয়োজনে এই আলোচনা অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন। অন্যদের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ভেনেজুয়েলার প্রতিনিধিরা এতে বক্তব্য দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার মানুষের বাস্তুহারা হওয়ার আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এক মিটার বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশের এক-পঞ্চমাংশ পানিতে তলিয়ে যাবে। এতে প্রায় তিন কোটি লোক বাস্তুচ্যুত হবে। এতে পুরো দেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। এই আলোচনার আয়োজক দেশ মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ফিলিপ কালদেরন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় একটি আইনি বাধ্যবাধকতাপূর্ণ চুক্তিতে আসার জন্য ডারবান জলবায়ু সম্মেলনের আগেই রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছানো জরুরি। মেক্সিকো জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের ষোড়শ সম্মেলনের সভাপতি দেশ। আর দক্ষিণ আফ্রিকা আগামী ডিসেম্বরে ডারবানে অনুষ্ঠেয় সপ্তদশ সম্মেলনে সভাপতির দায়িত্ব নেবে।

শেখ হাসিনা বলেন, “কার্বন গ্যাস নিঃসরণ কমিয়ে আনতে আইনগত বাধ্যবাধকতা রেখে ডারবান সম্মেলনে একটি চুক্তি করা সম্ভব হবে বলে আমরা আন্তরিকভাবে প্রত্যাশা করছি।”

আর জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব কাটিয়ে ওঠার জন্য অভিযোজন, ক্ষয়ক্ষতি প্রশমন, দরিদ্র দেশগুলোকে অর্থায়ন এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরের বিষয়গুলোও এই চুক্তিতে থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকির মুখে থাকা দেশগুলোর অভিযোজনের ব্যয় মেটাতে যত দ্রুত সম্ভব ‘গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড’ গঠনের জন্যও আহবান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে চিহ্নিত এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে তাদের সহায়তা দিতে হবে।

এই আলোচনার আয়োজন করার জন্য মেক্সিকো ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টকে তিনি ধন্যবাদ জানান।