মিশরের ভেঙে দেওয়া পার্লামেন্ট পুনর্বহালে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে সেনাবাহিনী।

গত মাসে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে নির্বাচিত পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেয় মিশরের আদালত।

গত রোববার এক ডিক্রির মাধ্যমে আদালতের দেওয়া পার্লামেন্ট বিলুপ্তির নির্দেশ বাতিল করেন প্রেসিডেন্ট মুরসি।

সোমবার প্রেসিডেন্টের জারি করা ডিক্রি প্রত্যাখ্যান করে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। এরপর সেনাবাহিনী থেকেও প্রেসিডেন্টের আদেশের বিরোধিতা করা হলো বলে বিবিসি জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পরিষদ জানিয়েছে, “পার্লামেন্ট বিলুপ্তির আদেশ রক্ষা করা হবে।”

এ ঘোষণার মাধ্যমে সেনাবাহিনী নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে ‘চ্যালেঞ্জ’ জানালো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। পাশাপাশি এটি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের প্রতি ‘হুমকি’ বলেও মনে করছেন কোনো কোনো বিশ্লেষক।

মাত্র এক সপ্তাহ আগে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে মিশরের ক্ষমতা গ্রহণ করেন মোহাম্মদ মুরসি। তিনি মিশরভিত্তিক আন্তর্জাতিক ইসলামি সংগঠন ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’ এর রাজনৈতিক শাখা ‘ফ্রিডম এন্ড জাস্টিস পার্টি’র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে জয়লাভ করেন। বিলুপ্ত নির্বাচিত পার্লামেন্টেও মুসলিম ব্রাদারহুড সদস্যদের আধিপত্য ছিল।

এদিকে, মুরসির আদেশের সূত্রে স্পিকার পার্লামেন্টের এক বৈঠক ডেকেছেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বৈঠকটি হওয়ার কথা।

এই বৈঠককে কেন্দ্র করে কায়রোর স্বাধীনতা চত্ত্বরে (তাহরির স্কয়ার) দলে দলে লোক এসে জমায়েত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিবিসির কায়রো প্রতিনিধি।

মুসলিম ব্রাদারহুড ঘোষণা করেছে, “প্রেসিডেন্টের আদেশ বাস্তবায়ন করে পার্লামেন্ট পুনর্বহালের জন্য লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ করা হবে।”

সর্বোচ্চ সেনা পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আইন ও সংবিধানের প্রতি রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠান শ্রদ্ধা দেখাবে বলে তারা বিশ্বাস করে।

বিশ্লেষকদের ধারণা, মিশরের রাজনৈতিক অস্থিরতা আবার ফিরে আসছে।

সেনাবাহিনী ও ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের মধ্যে বিরাজমান উত্তেজনা সত্বেও সোমবার সেনা ক্যাডেটদের এক গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট মুরসি ও সর্বোচ্চ সেনা পরিষদের প্রধান ফিল্ড মার্শাল হুসেন তানতাবি একত্রে উপস্থিত ছিলেন।