সিরিয়ায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের উপর সরকারি বাহিনীর দমন-পীড়ন ও হত্যাকাণ্ড বন্ধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবে ভেটো দিল রাশিয়া ও চীন৷ এই ঘটনার জন্য মস্কো ও বেইজিংয়ের সমালোচনা৷

জাতিসংঘের হিসাবে সিরিয়ায় চলমান বিক্ষোভ-আন্দোলনে এপর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে৷ সরকারি বাহিনীর দমন-পীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে আরো অসংখ্য গণতন্ত্রকামী নাগরিক৷ প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের এমন নিষ্ঠুর আচরণের বিরুদ্ধে সোচ্চার গোটা বিশ্ব৷ তবে রাশিয়া ও চীন বলতে গেলে একেবারে চুপ৷ গত ছয় মাস ধরে আলোচনার পর জার্মানি, যুক্তরাজ্য, পর্তুগাল ও ফ্রান্স সিরিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব উত্থাপন করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে৷ অথচ সেই প্রস্তাব অনুমোদনেও ভেটো দিল রাশিয়া ও চীন৷ এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, ব্রাজিল এবং লেবানন ভোট দান থেকে বিরত ছিল৷ তবে রাশিয়া ও চীনের এমন অবস্থানের কড়া সমালোচনা করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ৷ এছাড়া এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্স৷

সিরিয়ার বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ার রুশ ও চীনা সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে দামেস্ক৷ প্রেসিডেন্ট আসাদের মুখপাত্র বুসাইনা শাবান এটিকে ঐতিহাসিক দিন হিসেবে আখ্যায়িত করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এই ঘটনায় সিরিয়ার জনগণ আনন্দিত যে, দেশের অভ্যন্তরীণ ঘটনায় বহির্শক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর মতো দেশও রয়েছে৷” অবশ্য তিনি এও বলেন যে, রাশিয়া এবং চীনের এই সিদ্ধান্তের ফলে সিরিয়ার মানুষ আরো কিছুটা সময় পেল সংস্কার সাধন ও বাস্তবায়নের৷                        

এদিকে, রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাবে ভেটো দিলেও চলতি মাসেই সিরিয়ার বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর দু’টি প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠকের ঘোষণা দিয়েছে মস্কো৷ রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আলেক্সান্ডার লুকাশেভিচ বলেছেন, দামেস্ক ভিত্তিক বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর একটি দল এবং ইতিমধ্যে বিরোধীদের গঠিত জাতীয় পরিষদের একটি দলকে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমন্ত্রণ জানানো হবে৷ ফলে সিরিয়ার সংকটের একটি সমাধান সূত্র বের করার ব্যাপারে আন্তরিক মস্কো এমনটি মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷ কিন্তু তুরস্ক থেকে এসেছে বেশ কড়া সুর৷ দেশটির প্রধানমন্ত্রী রেচেপ তাইপ এর্দোয়ান জানিয়েছেন যে, নিরাপত্তা পরিষদে নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাব অনুমোদন না হলেও তুরস্ক নিজেই ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর মতো সিরিয়ার উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে৷ উল্লেখ্য, গত মাসেও তুরস্ক সিরিয়াগামী একটি অস্ত্রভর্তি জাহাজ আটকে দিয়েছিল এবং প্রতিবেশী এই দেশটিতে সরকারি বাহিনীর নৃশংসতার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান আঙ্কারার৷